অভয়নগরে নারী কনস্টেবলের মামলায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট স্বামী সাময়িক বরখাস্ত

প্রকাশঃ ২০১৮-০৮-১৯ - ২০:২৩

ফুলতলা প্রতিনিধিঃ যশোর জেলার অভয়নগর থানার বাসিন্দা পুলিশের নারী কনস্টেবল মোসা: পারুল আক্তারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়েরকৃত মামলার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট (সহকারী কমিশনার) স্বামী খন্দকার রবিউল ইসলামসহ ৪ জনকে আসামী করে আদালতে চার্চসীট দাখিল হয়েছে। এদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ)/৩০ ধারায় মামলা হওয়ায় নাটর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার খন্দকার রবিউল ইসলাম (১৭৩২৪) কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে তিনি ২ বার বরখাস্ত হলেন।
খুলনার ফুলতলার অদূরে অভয়নগরের ধুলগ্রামস্থ পুলিশের নারী কনস্টেবল মোসা: পারুল আক্তারের অভয়নগর থানায় দায়েরকৃত এজাহারে (নং-২২(৫)১৮) জানা যায়, পার্শ্ববর্তী নাউলী গ্রামের মোঃ সোলায়মান খন্দকারের পুত্র খন্দকার রবিউল ইসলামের সাথে কলেজে পড়াকালিন সময়ে পরিচয় ও জানাশুনা। ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর তারিখে পারুল আক্তার পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। রবিউলের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তিনি তার লেখাপড়ার খবর বাবদ প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে থাকেন। এ ভাবে তিনি এম এ পাশ করা পর্যন্ত খরচ চালিয়ে যান। ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর রবিউল ইসলামের সাথে ৪ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্যপূর্বক বিয়ে হয়। পরের বছর ১০ আগস্ট রবিউল চাকুরীতে যোগদান করেন। এর পর থেকে পারুলের উপর বিভিন্ন সময় শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন শুরু হয়। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে পরিবার থেকে জামাইকে নগদসহ ৫ লক্ষ টাকা মূল্যের স্বর্নালংকার ও আসবাবপত্র প্রদান করা হয়। এ ছাড়া পারুল জাতিসংঘের মিশন থেকে উপার্জিত ১০ লক্ষ টাকা স্বামী, দেবর ও শ্বশুর শ্বাশুড়ির হাতে তুলে দেন। এদিকে গত ২৯ মার্চ জোরপূর্বক স্বামী পরিবার অবৈধভাবে তার গর্ভপাত ঘটায় বলে পারুল এজাহারে উল্লেখ করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা অভয়নগর থানার এসাআই শেখ মোঃ রিফাতুল ইসলাম আড়াই মাস তদন্ত শেষে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে গত ৪ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ১১ (গ)/৩০ ধারায় অভিযোগপত্র (নং-২০০) দাখিল করেন। অভিযুক্তরা হলেন অভয়নগরের নাউলী গ্রামের স্বামী খন্দকার রবিউল ইসলাম (২৯), দেবর মোঃ মাসুদ খন্দকার (২৭), শ্বশুর মোঃ সোলাইমান খন্দকার (৫৫) ও শ্বাশুড়ি মোসাঃ সাহিদা বেগম (৪৮)। আসামীবৃন্দ বিজ্ঞ উচ্চ আদালতে আত্ম সমার্পন পূর্বক ৮ সপ্তারের অন্তঃবর্তিকালিন জামিন গ্রহণ করেন। অপরদিকে নাটর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কর্মরত সহকারী কমিশনার খন্দকার রবিউল ইসলাম (১৭৩২৪) এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং গত ২৮/০৫/২০১৮ তারিখে আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রাপ্ত হওয়ায় জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় তাকে চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত (নং-০৫.০০.০০০০.১৩৭.০০.১৪৮.১৫-২৫৫) করে। প্রসঙ্গতঃ খন্দকার রবিউল ইসলাম অনুরুপ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুন্যাল, যশোর আদালতে দায়েরকৃত মামলায় (১৯৬/১৪, তারিখ-০১/১২/১৪) ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় তাকে সাময়িক বরখাস্ত (নং-০৫.০০.০০০০.১৩৭.০০.২২১০.১৬৮) করে।