আবরার হত্যায় জড়িত দু’জন ছিলেন শিবিরে!

প্রকাশঃ ২০১৯-১০-১৫ - ১২:১১

ঢাকা অফিস : বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে নির্যাতনের শুরুটা করেছিলেন রবিন। কিন্তু, তিনি নিজেই জামায়াত-শিবির পরিবারের সন্তান। আরেক নির্যাতনকারী অনিকের চাচারা সবাই বিএনপির রাজনীতি করেন।
রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভার কাপাশিয়ায় মেহেদি হাসান রবিনের বাড়ি। রবিনের দাদা মমতাজ উদ্দিন মারা যাওয়ার আগে জামায়াতের হয়ে কাউন্সিলর নির্বাচনও করেছিলেন। আর, চাচা জামায়াত নেতা ইমরান আলীর বিরুদ্ধে রয়েছে নাশকতার চারটি মামলা। ২০০৮ সালে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর রবিনের বাবা ঢুকে যান আওয়ামী লীগে।  রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী বলেন, ‘রবিনের দাদা জামায়াত করতো। এ এলাকায় জামায়াতে মোটামুটি একজন সক্রিয় নেতা ছিলেন তিনি। তার চাচারাও জামায়াতের সঙ্গে কানেকটেড। এবং তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা রয়েছে। আমাদের দল পাওয়ারে আসার পরে, তার বাবা জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।’

তবে, রবিনের বাবার দাবি তার বাবা ও ভাইয়েরা জামায়াত করলেও তিনি আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড শাখার যুগ্ম সম্পাদক পদে রয়েছেন। আবরার হত্যায় রবিন জড়িত তা বিশ্বাস করতে পারছেন না তার বাবা-মা।

রবিনের বাবা মাকসুদ আলী বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি রাজনীতি করে আমি একজন বড় নেতা হব, অথবা সংসদ সদস্য হব, এরকম চিন্তা করে হয়তো সে রাজনীতি করে। এই যে, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমার ছেলে জড়িত এটা আমি বিশ্বাস করিনা। যেহেতু আমার ছেলে ফুটেজে নাই।’

রবিনের মা রাশিদা খাতুন বলেন, ‘ভালো করে পড়াশোনা করে যা হতে গেছে ইঞ্জিনিয়ারই হবে। আমার ছেলে এ ধরনের কাজ করতে পারেনা।’

এলাকায় শান্ত-নিরীহ হিসেবে পরিচিত রবিনের বন্ধুরা ছিলেন শিবিরের কর্মী। বুয়েটের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদকের হাত ধরে গত রমজান মাসে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন রবিন। কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী বলেন, সরকারকে বিব্রত করতে শিবির থেকে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ করে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়ে থাকতে পারে।

অন্যদিকে, বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার অনিক সরকারের বাবা ব্যবসায়ী। তার চাচারা সবাই বিএনপির নেতা। তবে, মামা আওয়ামী লীগের নেতা এবং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।

এদিকে, তার বাবা আনোয়ার হোসেন সরকার জানতেন না ছেলে রাজনীতিতে জড়িয়েছে। ছেলে অপরাধী হলে সাজা মানতেও প্রস্তুত তিনি। অনিকের বাবা জানান, ‘আগে থেকে আমরা জানতাম না সে রাজনীতিতে জড়িত। আমরা দেখতাম পড়াশোনা করে, ভালো রেজাল্ট করে। আমরাও ভালোবাসি তাকে। প্রকৃত অপরাধ করে থাকলে, আইন অনুযায়ী অবশ্যই মানতে হবে।’

এলাকার দুজনের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার খবরে অবাক হয়েছেন রাজশাহীবাসী। তবে, তারাও চান প্রকৃত অপরাধীর সাজা।