আবাসিক এলাকায় ট্রাক স্ট্যান্ড নিয়ে ত্রি-মুখী লড়াই

প্রকাশঃ ২০১৮-০২-২৫ - ১৬:৩৮

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠির কৃষ্ণকাঠিতে শিশুদের খেলার মাঠে অবৈধ ট্রাক স্ট্যান্ড স্থাপনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার পর এবার ত্রি-মুখী লড়াই শুরু হয়েছে। শহরের ঘণবসতিপূর্ণ কৃষ্ণকাঠি বালুর মাঠ এলাকায় গত শুক্রবার বিকেলে ট্রাক স্ট্যান্ড উদ্ধোধন করেন পৌর কর্তৃকপক্ষ। এতে এলাকা বাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে শনিবার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করে এলাকা বাসী। খবর ঝালকাঠি সড়ক বিবাগ কতৃপক্ষ ওই জমি তাদের দাবি করে রবিবার অবৈধ ট্রাকস্টান্ড অপসরণে ঝালকাঠি থানার পুলিশ নিয়ে জমি মেপে সীমানা পিলার দিয়ে তাদের জমিতে ট্রাক স্টান্ড বন্ধে তোরজোড় শুরু করলেও থেমে নেই পৌর কতৃপক্ষের ট্রাক স্টান্ড নির্মাণ। তবে সড়ক বিবাগ দাবি করেন তাদের না জানিয়েই পৌর কতৃপক্ষ তাদের জমিতে ট্রাক স্টান্ড নির্মাণ করা শুরু করে। এ বিষয় সড়ক বিবাগ আইনগত ব্যবস্থা নিবে বলে জানান। অপরদিকে পৌর সভার দুই কাউন্সিলর দাবিকরেন, সড়ক বিবাগে অনুমতিচেয়ে একটি আবেদন করে তারা ট্রাক স্টান্ড নির্মাণ শুরু করে। তারা আরো দাবি করেন, ওই জমি একটি পুকুর ছিলো যাহা পৌরসভার অর্থায়নে ভরাট করা হয়। রবিবার সরেজমিনে সকাল থেকে পৌর কর্তিপক্ষের বেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটা ও স্ট্রান্ড নির্মানাধীণ কাজ চলছে। এমনকি সড়ক বিভাগ ও পুলিশের উপস্থিতিতেও ট্রাক স্ট্যান্ড নির্মান কাজ করা দেখা গেছে।

এদিকে এলাকা-বাসী অভিযোগ করে বলেন, মাঠটি দীর্ঘ দিন ধরে শিশুদের খেলার মাঠ এবং ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়া স্ট্যান্ডের পাশের সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন ও মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শত-শত শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ যাতায়াত করেন। ট্রাক স্ট্যান্ড স্থাপনের ফলে ঘনবসতিপূর্ণ ওই এলাকার পরিবেশের জন্য মারাতœক ক্ষতির কারণ হবে বলেও দাবি করেন।এ সময় দ্রুত ঘণবসতিপূর্ণ কৃষ্ণকাঠি বালুর মাঠ এলাকায় থেকে ট্রাক স্ট্যান্ড অপসরণ না করা হলে কঠোর কর্মসুচি নিবে বলে হুশায়ারী দেন তারা। এছাড়াও শনিবার এলকাবাসী ঘনবসতি এলাকায় শিশুদের খেলার মাঠে অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড স্থাপনের প্রতিবাদে মানববন্ধন মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এছাড়াও এলাকাবাসির অভিযোগ স্থানীয় কাউন্সিলার দুলাল হাওলাদার ও মহিলা কাউন্সিলার তসলিমা বেগম ট্রাক মালিক দের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময় এ ট্রাক স্ট্রান্ড নির্মাণ এর নেপথ্যে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ দিকে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঐ এলাকার সন্তান মো: জামাল হোসেন মিঠু বলেন, ঘনবসতি আবাসিক এলাকায় পৌরসভার আকস্মিক ট্রাক স্ট্যান্ড করা কান্ডজ্ঞান হীন ছাড়া আর কিছুই নয়। নিজেদের স্বার্থের জন্য শত শত ঘনবসতি,সরকারি বেসরকারি দপ্তর ও শিশুদের স্কুলের পাশে ট্রাক স্ট্যান্ড নির্মাণ বন্ধ না করা হলে এলাকা বাসি কে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানান। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকসহ আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর নিকট ট্রাক স্ট্যান্ড বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মস্তফা পৌর-কর্তিপক্ষের দাবি অস্বীকার করে বলেন,আমরা আমাদের জমিতে কোন ট্রাক স্ট্যান্ড নির্মাণের অনুমতি দেইনি বা আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়নি। আমি খবর পেয়ে আজ (রবিবার) ট্রাক স্ট্যান্ড নির্মাণ বন্ধ করেছি। পাশা পাশী বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তিপক্ষকে ও লোকাল থানায় অবহিত করি। এ বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নিব।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি পৌরসভার কাউন্সিলার মো: হুমাউন কবির বলেন,আমরা সড়ক বিভাগের ঐ জমিতে অস্থায়ী ট্রাক স্ট্যান্ড করার জন্য লিখিত ভাবে অনুমতি চেয়ে ট্রাক ষ্ট্যান্ডের নির্মাণ শুরু করেছি। কিন্তু এই এলাকার কয়েক জন স্বর্থণেশি ভুমি দস্যু নিজেদের সার্থের জন্য বিষয়টি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়াও তিনি বলেন, ঐ জমিতে একটি পুকুর ছিল। যাহা ইতিপূর্বে ঝালকাঠি পৌরসভার অর্থায়নে ভরাট করা হয়েছিল এবং এখানে পৌরসভার অধীনে গরুর হাট বসতো। আমরা অন্যায় ভাবে কিছুই করব না।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানার এস আই হরিদাস পাল বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তিপক্ষের নির্দেশে ঘটনা স্থলে এসেছি, কোন রকম বিশৃংস্খলা কিংবা অপ্রীতিকর কোন ঘটনা না ঘটে তাহার ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে এ ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে কর্তিপক্ষের নির্দেশে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।