একই জমিতে একাধিক ফসল সবজি চাষে স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা

প্রকাশঃ ২০২১-০১-০৯ - ২১:২১

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, ডুমুরিয়া : সমন্বিত সবজি চাষে স্বপ্ন দেখছেন খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চাষিরা। উপপেজেলার হোগলাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল ওয়াদুদ ৩৩ শতক জমিতে হলুদের চাষ করেছেন। একই জমিতে তিনি রোপণ করেছেন মরিচের চারাও। একসঙ্গে একই জমিতে রোপন করেছেন বেগুন গাছও। দুই ধরনের সবজি চাষ করলেও কোনটারই ফলনে প্রভাব পড়েনি। বেগুন আর মরিচ দুটোরই ফলন ভাল হয়েছে। প্রতিদিনই বাজারে বিক্রি করছেন সেই সবজি। আব্দুল ওয়াদুদ ছাড়াও খর্নিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন, পাশখালী রহিমা বেগম, হাজিবুনিয়া গ্রামের জগদীশ মন্ডল, খামারবাড়ি গামের সুব্রত মন্ডলসহ বেশ শতাধিক কৃষক সমন্বিত সবজির আবাদ করেছেন। জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার হোগলাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, অন্যান্য সবজির চেয়ে মশলা জাতীয় ফসল হলুদ আবাদ রাভজনক। তাছাড়া একই সাথে বেগুনের বাজারমূল্যও বেশি। মরিচের দামও কম নয়। ৩৩ শতক জমিতে সবমিলিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মেটে আলু বিক্রি করেছি ২৫ হাজার টাকা, মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। বেগুণ বিক্রি করেছি ৩৫ হাজার টাকার মত। এছাড়া আশা করছি হলুদ বিক্রি হবে প্রায় ১ লাখ টাকা। কৃষি অফিস ষূত্রে জানা যায়, মরিচের সঙ্গে ফুলকপি কিংবা বাঁধাকপি, বেগুনের সঙ্গে মরিচ, আলুর সঙ্গে মরিচ, মুলা, পালংক শাক ও ধনিয়া পাতা ইত্যাদি একযোগেই চাষাবাদ করছে এসব অঞ্চলের কৃষক। অপরদিকে আলুর ক্ষেতে মাচায় শিম বা লাউ চাষও করা হচ্ছে।
একসঙ্গে একাধিক সবজি চাষের দিকে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। এতে একটা ফসলে লোকসান হলেও দ্বিতীয় ফসলে লাভ হবেই। এ কারণে কৃষকের লোকসানের সম্ভাবনা নেই। খর্নিয়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ২/৩ বিঘা জমিতে হলুদসহ ফুলকপি ও বাঁধাকপি একসঙ্গে আবাদ করেছি। এছাড়াও বেগুন-মরিচ, আলু, লাউ, মিস্টি কুমড়া চাষ করেছি। বেশ কয়েকদিন আগেই বেশিরভাগ ফসল বিক্রি শুরু করেছি। খামারবাড়ি গ্রামের চাষী সুব্রত মন্ডল জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শ মতে এক বিঘা জমিতে উচ্চ হলুদের সাথে ফলনশীল বেগুন চাষ করেছিলাম। মৌসুমের শুরুতেই বেগুন বিক্রি করতে পেরেছি। উচ্চ ফলনশীল বেগুন চাষে বেশ লাভ হয়েছে। একই জমিতে মরিচও চাষ করেছি। তাও পরিপক্ক হতে শুরু করেছে। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, জমিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানলে চাষাবাদে লাভ আসবেই। আগের দিনে কৃষকেরা এক ধরনের ফসল চাষে অভ্যস্ত ছিল। বর্তমানে সেটা আর নেই। বেশিরভাগ চাষিই একাধিক ফসল চাষে লাভবান হচ্ছে। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মোছাদ্দেক হোসেন জানান, শীতকালীন সবজির মৌসুমে ডুমুরিয়ার অধিকাংশ চাষী একইসঙ্গে একাধিক ফসল চাষ করছে। একাধিক ফসল চাষে কৃষকের যেমন বেশি মুনাফা হয় তেমনি জমির উর্বরতা শক্তিও বাড়ে। আমরা তাদের উৎসাহ ও সহযোগিতা করছি। তিনি বলেন ডুমুরিয়ায় এবার ৬০ হেক্টর ( ১ হেক্টর= ২.৪৭ একর) অর্থাৎ ৪২০ বিঘা জমিতে হলুদসহ অন্যান্য সবজির সমন্বিত ফসলের আবাদ হয়েছে।