কানাডায় আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা

প্রকাশঃ ২০১৯-০৭-২৬ - ১৮:৫২

ঢাকা অফিস : বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা কানাডায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছে কানাডার গণমাধ্যম। ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন।

সিনহা দাবি করেছেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে সরকারের পক্ষে রায় দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তিনি হুমকির শিকার হন। দ্বিমত পোষণকারী বিচারকদের সরিয়ে দিতে সংসদের হাতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা চেয়েছিল সরকার।

কানাডার দ্য স্টার পত্রিকার খবরে জানানো হয়, ৪ জুলাই বিচারপতি সিনহা ফোর্ট এরি সীমান্ত দিয়ে কানাডায় প্রবেশ করেন এবং শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। বিচারপতি সিনহা ছিলেন প্রথম হিন্দু, যিনি আদালতের শীর্ষ পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন।

সিনহা অভিযোগ করেছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে রায় দিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার তিন মাস পর তাঁকে নির্বাসিত হতে হয়।

গত সপ্তাহে দ্য স্টারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বিচারপতি সিনহা বলেন, ‘আমি অ্যাকটিভিস্ট বিচারক ছিলাম বলে টার্গেটে পরিণত হই। আমার রায়ে আমলাতন্ত্র, প্রশাসন, রাজনীতিবিদ ও সন্ত্রাসীরা ক্ষুব্ধ হন। আমি এখন দেশের শত্রু, সরকার আমাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।’

চলতি মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে মামলা করেছে। দ্য স্টার জানিয়েছে, এসব অভিযোগের ব্যাপারে দুদকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সাড়া দেয়নি। আর সিনহা তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সরকারের বিরুদ্ধে সিনহার অভিযোগের বিষয়ে কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশনার মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা অস্বীকার করেন। মিজানুর রহমান দ্য স্টারকে ফোনে অটোয়া থেকে বলেন, বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকেই বিচারপতি সিনহা দেশ সম্পর্কে অসত্য বক্তব্য দিয়ে চলেছেন। দেশে ফেরার ব্যাপারে তাঁর ওপর কোনো হুমকি নেই। শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় প্রার্থনার আবেদনকে পোক্ত করার জন্য তিনি এসব বক্তব্য দিয়ে চলেছেন।

এদিকে আশ্রয় আবেদনে সিনহা উল্লেখ করেছেন, ২০১৭ সালের ২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে তাঁকে ডাকা হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলায় সরকারের পক্ষে তাঁকে আদেশ দিতে বলেন, যাতে বিচারকদের বরখাস্ত করা সরকারের জন্য সহজ হয়।