খুমেক হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশঃ ২০২০-০৬-১৬ - ১৮:৪৩

বিধি বহির্ভূতভাবে সেবা তত্ত্ববধায়ক দায়িত্ব অব্যাহতি, অন্যকে দায়িত্ব প্রদান

কামরুল হোসেন মনি : খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পরিচালক ডা: মুন্সী মোহাম্মদ রেজা সেকেন্দার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ‘বিধি বহির্ভূতভাবে’ সেবা তত্ত্বাবধায়ককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে আরেকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়ে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এই ‘ স্বেচ্ছাচারিতয়’ হাসপাতালে নার্সসহ স্টাফরা দিনকে দিন ক্ষোভে ফুসে উঠেছেন। সোমবার খুমেক হাসপাতালে উপ-সেবা তত্ত্বাবধায়ক আসমাতুন নেছার উপর অতিরিক্ত সেবা তত্ত্বাবধায়কে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করে তার জায়গায় নার্সিং সুপার ভাইজার জেসমিন নাহারকে ভারপ্রাপ্ত সেবা তত্ত্ববাধায়ক দায়িত্ব প্রদান করেন হাসপাতালের পরিচালক।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: রাশেদা সুলতানা বলেন, হাসপাতালে সেবা তত্ত্বাবধায়ক থেকে অব্যাহতি বা কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার ওই হাসপাতালের পরিচাালকের নেই। ওই ডিপার্টমেন্টাই আলাদা। খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ওয়ার্ডে কোন নার্স ইনচার্জের দায়িত্ব বা কাউকে সরাতে পারেন। কিন্তু ওই সেবা তত্ত্ববাধয়কে পদে থাকা কাউকে অব্যাহতি বা অন্য কাউকে তিনি দায়িত্ব দিতে পারেন না।
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পরিচালক ডা: মুন্সী মোহাম্মদ রেজা সেকেন্দার বলেন, অতিরিক্ত দায়িত্ব ছিলো বলে তাকে সরিয়ে দিয়েছি।
খুমেক হাসপাতালের উপ-সেবা তত্ত্বাবধায়ক আসমাতুন নেছা বলেন, ২০১৯ সালে ২৬ ফেব্রুয়ারি উপ সেবা তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে তিনি এখানে যোগদান করেন। পাশাপাশি সেবা তত্ত্ববাধয়কের পদ খালি থাকায় একই সাথে এর দায়িত্বও তিনি পালন করেন। তিনি বলেন, আমাদের এই সব পদে কাউকে সরাতে বা সেখানে কাউকে পদোন্নতী দেওয়ার একমাত্র এখতিয়ার আছে স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় (স্বাস্থ্য সেবা) বিভাগের। তাও বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (বিপিএসপি) সুপারিশ ক্রমে করতে হবে। কিন্তু হাসপাতালের পরিচালক বিধি বহির্ভূত এ কাজটি করেছেন। আমি তদন্তে কাজে বাহিরে থেকে এসে ওই পরিচালক আমাকে অব্যাহতি দিয়ে চিঠি প্রেরণ করেন।
হাসপাতালের একাধিক নার্সরা অভিযোগ করে বলেন, পরিচালক ডা: মুন্সী মোহাম্মদ রেজা সেকেন্দার রুমে চতুর্থ শ্রেনী কর্মচারি (আউটসোর্সিং) ইমনকে দিয়ে গত ৪ জুন মোবাইলে কেবিনের ইনচার্জ এর সাথে অসাদচারন করেন। বিষয়টি অভিযোগ দিলে উল্টো ওই ইনচার্জ ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন এবং করোনা হাসপাতালে ডিউটি দেওয়ার ভয় দেখায়।
নার্সরা জানান, হাসপাতালের পরিচালকের বন্ধু হিসেবে পরিচিত রুমে জনৈক লিটন নামে এক ব্যক্তির সখ্যতা রয়েছে। সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৩০ জন অস্থায়ী ভিত্তিতে লোক নেওয়ার বিষয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পরিচালকের গ্রামের বাড়ি থেকে লোক নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে জন¯্রােত রয়েছে। ওয়ার্ড মাস্টারের রোস্টার বন্ধ করে দিয়ে তিনি নিজেই তার বন্ধু জনৈক লিটনকে নিয়ে রোস্টার তৈরি করার বিষয়ে এখন সবার মুখে মুখে রয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন বছর আউটসোর্সিং চাকুরিতে নিয়োজিত অনেক চতুর্থশ্রেণীকে তিনি চাকুরিচ্যুত করেন। সেখানে তার নিজের পছন্দের লোককে মোটা অংকের বিনিময়ে সেখানে চাকুরিতে যোগদান করান।
খুমেক হাসপাতালের একাধিক স্টাফরা জানান, তার নিয়ম বহি:র্ভূত কাজ কর্মের জন্য আস্তে আস্তে হাসপাতালের নার্স ও স্টাফদের মধ্যে ক্ষোভের দানা বাধতে শুরু করেছে। যে কোন মুহুর্তে ক্ষোভের বি¯েফারণ ঘটার আশংকা প্রকাশ করছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।