খুমেক হাসপাতালের সামনের সড়কে থামছে না দখলদারদের দৌরাত্ম্য

প্রকাশঃ ২০১৯-০২-০৫ - ১১:১৬

কামরুল হোসেন মনি : খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের মেইন গেটের সামনে মেইন সড়কের অনেকাংশই জুড়ে অবৈধভাবে শিকড় গেড়ে বসেছেন বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। ফুটপাতসহ রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে এই অ্যাম্বুলেন্স গাড়ির স্ট্যান্ডটি। এর ৪ মাস আগে ওই জায়গা দখল করে ছিলো ২৫-৩০টি ভাসমান চা-পান সিগারেটের দোকান । সেগুলো স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন উচ্ছেদ করার পরই এখন অ্যাম্বুলেন্স গাড়ির দখলে চলে গেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে অঘোষিত এ স্ট্যান্ডটি বহাল তবিয়াতে রয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সরেজমিনে গেলে এ চিত্র পাওয়া যায়।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেইন গেটের ডান পাশে মেইন সড়ক দখল করে ২৫-৩০টি গাড়ি সারিবদ্ধভাবে রাখা রয়েছে। সামনে যাত্রী ছাউনি। বাস থেকে যাত্রীরা নামার পর সড়কে অ্যাম্বুলেন্স থাকায় যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। ৪৫টি অ্যাম্বুলেন্স এই সড়কের উপরে রাতে রাখা হয়। দিনে তো আছেই। যেন সড়কটি অ্যাম্বুলেন্সের স্ট্যান্ডে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রায় ৪ মাস ধরে রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে রাখা হচ্ছে এই অ্যাম্বুলেন্সগুলো। এর আগে এখানে থাকা ২৫-৩০টি ভাসমান চা-পান সিগারেটের দোকান অবৈধভাবে শিকড় গেড়ে বসেছিলো। তাদেরকে উচ্ছেদ করেন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। এর কয়েকদিন পরই উচ্ছেদের জায়গা দখলে নেয় অ্যাম্বুলেন্স চালকরা।
জানা গেছে, পুলিশের কতিপয় অসাধু সদস্য এমনকি ক্ষমতাসীন খুমেক হাসপাতাল এলাকার কতিপয় নেতাকর্মীকে ম্যানেজ করেই এখানকার রাস্তা দখল করে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সগুলো রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অপর একটি সূত্র জানায়, এ ফুটপাত যারা নিয়ন্ত্রণ করছেন তারা অনেক প্রভাবশালী। যে কারণে তাদের শিকড় উৎপাটন সম্ভব হচ্ছে না। শুধু খুমেক হাসপাতাল সংলগ্ন ফুটপাত বা সড়কই নয়, খুলনা জেনারেল হাসপাতালে সড়কের সামনেও একই হাল। খুলনা সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় এই হাসপাতালের সামনে ফুটপাত ও রাস্তার ওপর যেসব ভাসমান দোকান ছিলো সেগুলো উচ্ছেদ করেন। সেই জায়গার দখলে আছে ওষুধ প্রতিনিধিদের মোটরসাইকেল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুমেক হাসপাতাল এলাকার এক ফল ব্যবসায়ী জানান, এর ৪ মাস আগে যখন হাসপাতালের সামনে ভাসমান চা-পান সিগারেটের দোকানগুলো ছিলো তখন তাদেরকেও প্রতিদিন ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১শ টাকা পর্যন্ত দিতে হতো। এখন সেই জায়গা দখলে নিয়ে গেছে অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। ভাসমান বিক্রেতারা যদি অবৈধভাবে বসার কারণে রাস্তা চলাচলে সাধারণ জনগণের বাধা সৃষ্টি হয়। তাদেরকে উচ্ছেদ করলো। তাহলে এখন প্রশাসন কেন চুপ করে আছে। এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি।
ফুটপাতগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় হাঁটার স্থান সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই যানবাহনের মধ্যে রাস্তায় হাঁটতে হয় মানুষকে। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনা। হকাররা ছাড়াও অনেক স্থানে ফুটপাত দখল করে রাখা হয় গাড়ি। আর এ দখলবাজির চক্করে পড়ে সাধারণ জনগণ চলাফেরার জন্য ব্যবহার করছেন মূল সড়ক। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, আগে ওইসব অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালের ভেতরে ছিলো। এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স রোগী নিয়ে ভেতরে ঢোকা ব্যতিত অ্যাম্বুলেন্স ভেতরে রাখা বন্ধ করে দিয়েছে। এ জন্য তারা ওইখানে রাখছে বলে জানতে পারি।