খুমেক হাসপাতালে সর্বস্তরের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব : ডা: এটি এম মোর্শেদ

প্রকাশঃ ২০২১-০১-১৭ - ১৮:৫২

খুলনা অফিস : খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের সকল সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে এই হাসপাতালকে স্বাস্থ্য সেবা আরো উন্নয়নের মধ্যে দিয়ে সর্বস্তরের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব। সাধারণ রোগী যাতে এই হাসপাতাল থেকে কোন ধরণের স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেই উদ্দেশ্যে কাজ করে যাবো। সেক্ষেত্রে একার পক্ষে সম্ভব না। এ জন্য হাসপাতালের সকল চিকিৎসক-নার্স, কমকর্তা-কর্মচারিদের সহযোগিতা প্রয়োজন। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) খুমেক হাসপাতালের খুমেক হাসপাতালের প্রথম পরিচালক ডা: মঞ্জুর মোর্শেদ এ সব কথা তুলে ধরেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ জুন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে প্রথম দায়িত্ব গ্রহণ করেন ডাঃ এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ। এর পর থেকে রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধিতে একে একে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করেন। ভর্তি রোগীদের পরিমান মতো খাবার না পাওয়া ও খাবারের অনিয়ম পাওয়ায় তত্ত্ববধায়ক তৎকালীন দুই জনকে শোকজও করেন। এরপর থেকে সিডিউল অনুযায়ী রোগীরা তাদের প্রাপ্য খাবার পেতে শুরু করেন। আগে নির্দিষ্ট শয্যা সংখ্যার বেশি ভর্তি রোগীর জন্য খাবার বরাদ্দ ছিল না। হাসপাতালটির জন্মলগ্ন থেকে এই নিয়মটি চালু ছিল না। ডা: এটি এম মঞ্জুর মোর্শেদ প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে হাসপাতালে এই সুবিধা পেতে শুরু করেছে। এর পর হাসপাতালের পরিচালক পদ সৃষ্টি হলে তিনি প্রথম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ওই সময় দায়িত্ব থাকাকীন পরিচালক ডা: মঞ্জুর মোর্শেদ মানসিক  রাগ বিভাগ চালুসহ ২৭টি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গুলো হচ্ছে হাসপাতালে নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত, রোগীদের খাবারের মান বৃদ্ধি, লাশঘর স্থানান্তর করা, দালাল প্রতারক প্রতিরোধ করা, ১টার পূর্বে ওষুধ প্রতিনিধিদের ভিজিট বন্ধ করা, প্যাথলজি বিভাগে স্যাম্পল কালেকশন সময় বৃদ্ধি করা, ব্লাড ব্যাংকের পাশে নতুন করে কক্ষ নির্মান, অনুমোদিত ৫শ’ শয্যার রোগীর পরিবর্তে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ভর্তিকৃত সকল রোগীর খাবার ব্যবস্থা করা, ওয়ার্ড ইনচার্জদের দায়িত্ব পরিবর্তন করে নতুনদের দায়িত্ব অর্পন করা, জখমি সনদপত্র প্রদানের জন্য বোর্ড গঠনপুর্বক কেবলমাত্র থানা ও আদালত থেকে চাহিদার প্রেক্ষিতে স্বচ্ছতার সঙ্গে জখমী সনদপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি সবই তার অবদান।
সূত্র জানায়, করোনার শুরুতে গত ২১ মার্চ এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিই পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় ঔষধাগার  থেকে। কিন্তু এন-৯৫ মাস্কের প্যাকেটের ভেতরে অত্যন্ত নিম্নমানের লোকাল মাস্ক ঢুকানো ছিল। এ নিয়ে ২৯ মার্চ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন খুমেক হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক ডাঃ  মোর্শেদ। এন-৯৫ এর পরিবর্তে নি¤œ মানের মাস্ক পাঠানোয় তিনি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মুন্সিগঞ্জের জেএমআই ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তোলেন। এর দুই দিনের মাথায় তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে পাবনায় মানসিক হাসপাতালে বদলি করা হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে। এরপর চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি নতুন এক আদেশে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুনরায় বদলী করা হয়।
হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ এ প্রতিবেদককে বলেন, Special Care Newborn Unit (SCANU)  সেবাটি চালু করা হয়েছে। পূর্বে এ হাসপাতালে ছিলো না। এছাড়া হাসপাতালে রোগীরা প্রায় অক্সিজেনে সংকট থাকায় রোগীরা বাইরে থেকে ভাড়া করে আনতেন এখনো অক্সিজেন  রোগিদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া নতুন তিন ওটি চালুর জন্য সকল প্রস্তুতি ওই সময় আমি দায়িত্ব থাকাকালীণ সম্পন্ন করেছি। নতুন আঙ্গিকে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা পৃথক ওয়ার্ড করেছি। এখন আবারও পরিচালক হিসেবে এই হাসপাতালে দায়িত্ব পাওয়ার আমার অসম্পূর্ণ কাজগুলো শেষ করে যেতে পারি এ জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।