খুমেক হাসপাতালে স্বেচ্ছায় দেওয়া রক্ত বিক্রির তদন্ত প্রতিবেদন জমা

প্রকাশঃ ২০২০-০১-১৫ - ১৭:৫৩

অভিযোগের তীর ইনচার্জসহ অনেকের বিরুদ্ধে : ব্লাড ব্যাংকের ল্যাব অ্যাটেন্টেন্ড বদলি

কামরুল হোসেন মনি : খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগে ব্লাড ব্যাংকে কিছু কর্মচারী বহির্ভূত অনিয়ম কাজের রোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালের গঠিত তদন্ত কমিটির তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবার হাসপাতালের পরিচালকের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেন।
খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত তিবেদন জমা দিয়েছেন। অফিসাল কাজে ঢাকায় চলে আসায় তদন্ত প্রতিবেদনটি দেখা হয়নি। তিনি বলেন, ব্লাড ব্যাংকের সাথে যে কেউ দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ল্যাব অ্যাটেন্ডেন্ট রওশন আরাকে হাসপাতাল থেকে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া আদনানকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
ব্লাড ব্যাংকের ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট রওশন আরা বলেন, আমার বদলির আদেশটা জানতে পেরেছি, তবে আদেশ কপি আমি পাইনি। সাথে সাথে ক্ষোভের সাথে তিনি উল্লেখ করেন, আমার যদি সামান্য বিষয়ে শাস্তি হয়ে থাকে তাহলে ল্যাব সহকারী মোঃ মুজিবর শেখসহ অন্যান্য যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে কি কোনো বিচার হবে না এমন প্রশ্ন তোলেন। এর আগেও মুজিবুর নামে রক্ত কেনা বেচার অভিযোগ রয়েছে।
খুমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও তদন্ত কমিটির সভাপতি ডাঃ আতিয়ার রহমান সেখ বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছি। তবে এ তদন্তে কারা জড়িত বা কাদের নামে অভিযোগ পাওয়া গেছে সে বিষয়ে তথ্য দিতে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন।
খুমেক হাসপাতালে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ব্লাড ব্যাংকের ইনচার্জসহ একাধিক ব্যক্তির নামে অভিযোগের তীর রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে আসা রোগীদের রক্তের ক্রচম্যাচিং ফি বাবদ যে টাকা নেওয়া হয় তা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি।
ব্লাড ব্যাংকের ইনচার্জ মোঃ আজাদ বলেন, আমাকে তদন্ত কমিটি বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেয়ে থাকে তাহলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে। তবে আমি কোনো দুর্নীতির সাথে জড়িত নই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, খুমেক হাসপাতালে গাইনী বিভাগের ভর্তি গত ৫ জানুুয়ারি রায়হানের স্ত্রী ববির রক্তের জন্য তার স্বামী রায়হান ও শাশুড়ি খুমেক হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংকে স্বেচ্ছাসেবাদীদের দেওয়া রক্ত টাকার টাকার বিনিময়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ তিন সদস্য কমিটি গঠন করেন। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ আতিয়ার রহমান সেখকে সভাপতি করে এ কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ অঞ্জন কুমার চক্রবর্তী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ বেলাল হোসেন।
‘খুমেক হাসপাতালে স্বেচ্ছায় দেওয়া রক্ত বিক্রি হচ্ছে!’ শীর্ষক শিরোনামে এক প্রতিবেদন গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।