খুলনাকে আধুনিক ও পরিকল্পিত তিলোত্তমা নগরী হিসাবে গড়ে তুলবো

প্রকাশঃ ২০১৮-০৪-২৫ - ১৬:০২

খুলনা : জলাবদ্ধতা দূরীকরন, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যাবস্থার উন্নয়ন, হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি সহনশীল পর্যায়ে রাখা, যাতায়াত ব্যাবস্থার উন্নয়ন চিত্ত বিনোদনের সুযোগ বৃদ্ধি, নগরীর সম্প্রসারন সহ মহানগরীকে আধুনিক ও পরিকল্পিত তিলোত্তমা নগরী হিসাবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার সহ ৩১ দফার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনা করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আলহাজ¦ তালুকদার আব্দুল খালেক।
গতকাল বুধবার দুপুর ১২ টায় খুলনা প্রেসক্লাবের শহীদ সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি নগর বাসীর জন্য এই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনা করেছেন । এসময় তিনি লিখিত ইশতেহারে তিনি বলেন, ইতিপূর্বে আমি কেসিসি’র ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে ১২ বছর যাবৎ দায়িত্ব পালন করেছি। রামপাল-মোংলা নির্বাচনী এলাকা থেকে আমি ৪ বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি এবং দূর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আপনারা আমাকে কেসিসির মেয়র নির্বাচিত করেছেন। এজন্য আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। সেসময় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনা করেছিলাম। ওই ৫ বছরে আমার দেওয়া অঙ্গিকার ও প্রতিশ্রুতি অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয়েছে। বিশেষ করে খুলনা মহানগরীর রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা দূরীকরনে বেশ সাফল্য অর্জিত হয়েছিল। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ২০১৩ সালে আমি মেয়র নির্বাচিত হতে পারিনি। তাই আমার অঙ্গিকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার সুযোগ ছিল না।
তিনি আরো বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহনের পর ওই সময় মহাজোট সরকারের আমলে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে সর্বাধিক ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। ২৭৫ কেটি টাকা ব্যায় হয়েছিল, প্রায় ৭’শ কোটি টাকা রেখে এসেছিলাম। কিন্তু গত ৫ বছরে নগরবাসী কাঙ্খিত সেবা ও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কেসিসিতে আমার আগের কার্যক্রম মূল্যায়ন করে আপনারা যদি আমাকে আবারো মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেন তাহলে সকলের সহযোগীতায় খুলনাকে একটি উন্নত, সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও পরিকল্পিত আধুনিক নগর হিসেবে গড়ে তুলতে পারব বলে আমি আশা করি।
তিনি নগরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ইতিপূর্বে ৫ বছর কেসিসির মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে কেসিসি ও নগরবাসীর স্বার্থের বাইরে জ্ঞাতসারে কোন কাজ করিনি। কারো প্রতি অহেতুক কোন খারাপ আচরন করিনি। তারপরও মানুষ মাত্রই ভূল হয়। মেয়র হিসেবে অথবা অন্যকোন সময় নগরবাসীর কেউ যদি আমার আচরনে মনে কষ্ট বা দুঃখ পেয়ে থাকেন তবে তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি সবসময় মানুষের ভালোবাসা দোয়া আর্শিবাদ নিয়ে সৃষ্টিকর্তার উপর আস্থা রেখে জনকল্যানে কাজ করে যাচ্ছি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমার এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
নির্বাচনী ইশতেহারের উল্লেখযোগ্য প্রতিশ্রুতির মধ্য রয়েছে সিটি গভর্ণমেন্ট ব্যাবস্থ প্রবর্তনের উদ্দ্যোগ, পরিকল্পনা গ্রহনে পরামর্শ কমিটি গঠন, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যাবস্থার উন্নয়ন, স্বাস্থ সেবার মান উন্নয়ন, হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে সেবার মান বৃদ্ধি, কবরস্থান ও শ^শান ঘাটের উন্নয়ন, মাদক ও চাদাবাজ মুক্ত নগর গড়ে তোলা, নতুন আয়ের উৎস সৃষ্টি, সিটি সেন্টা নির্মান করা, বিনা মূল্যে তথ্য প্রযুক্তি ব্যাবহারের সুযোগ সৃষ্টি, পার্ক উদ্দান নির্মান ও বনায়ন সৃষ্টি, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের উন্নয়ন ও বিকাশ ঘটানো, মুক্তিযুদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যাক্তিদেও নামে রাস্তার নামকরন, প্রতিটি ওয়ার্ডে ক্রিয়া উন্নয়নে উদ্দোগ গ্রহন, সোলার পার্ক আধুনিকায়ন, বধ্য ভুমিগুলোর স্মৃতি সংরক্ষন, কেসিসিকে দুর্নীতি মুক্ত কারা, যাতায়াত ও ট্রাফিক ব্যাবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা ব্যাবস্থার উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্টায় সহযোগীতা প্রদান, সুইমিং পুল স্থাপন, বয়স্ক ও প্রতিবন্দিদের সহায়তা প্রদান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহন, নতুন তিনটি থানা পরিকল্পিত ভাবে গড়ে তোলা, আধুনিক কসাইখানা নির্মান, খালিশপুর ও রূপসা শিল্প অঞ্চলের উন্নয়ন, ওয়াসা, কেডিএ, রেল, টেলিকমিউকেশন ও বিদ্যুৎ পরিশেবা উন্নয়ন, খুলনা মহানগরী সম্প্রসারনে উদ্দোগ গ্রহন।
খুলনা প্রেসক্লাবে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনার সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, খুলনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শেখ হারুনুর রশীদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক এস এম কামাল হোসেন, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক কাজি আমিনুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সাংসদ এ্যাড. সোহরাব আলী সানা, বঙ্গবন্ধরু ভ্রাতুষপুত্র, বিসিবি পরিচালক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য শেখ সোহেল, ডা. শেখ বাহারুল আলম, মোঃ আশরাফুল ইসলাম, শ্যামল সিংহ রায়, এ্যাড. ফরিদ আহমেদ, মোঃ মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ, জোবায়ের আহমেদ খান জবা, অধ্যাপক মিজানুর রহমান, হাফেজ মোঃ শামিম, মোঃ মফিদুল ইসলাম টুটুল, এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, এ্যাড. আনিসুর রহমান পপলু, চয়ন বালা প্রমুখ।
নির্বাচনী ইশতেহার পাঠ করার পর তিনি যাতে আসন্ন ১৫ মে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে নগরবাসীর সেবা করতে পারেন তার জন্য নগরবাসীর কাছে দোয়া ও নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেছেন।