চট্টগ্রামের প্রকৌশলী কায়কোবাদের সনদ জালিয়াতিঃ জাল সনদে নয় বছর ধরে চাকরি!

প্রকাশঃ ২০২১-০১-১৫ - ২১:৩৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সনদ জালিয়াতি ও ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ দিয়ে চাকরি নেওয়ার নয় বছর পর অপসারণ করা হয়েছে চট্টগ্রামের প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উপ-প্রধান প্রকৌশলী কায়কোবাদ আল মামুনকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান মো. রইছ উদ্দিন স্বাক্ষরিত অপসারণের আদেশ চট্টগ্রামে পৌঁছে। এর আগে জালিয়াতি করে চাকরি নেওয়ার তদন্ত শেষে বোর্ডসভায় অভিযুক্ত কায়কোবাদ আল মামুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে সংস্থাটি।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানায় ২০১৭ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন উপপ্রধান প্রকৌশলী কায়কোবাদ আল মামুন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম জমা পড়ে সংস্থায়। এসব অনিয়ম তদন্তে করতে গিয়ে বের হয়ে আসে তাঁর নিয়োগটি হয়েছিল জালিয়াতির মাধ্যমে।

বিএসইসির দীর্ঘ তদন্ত শেষে জানানো হয়, মামুন ডিপ্লোমা পরীক্ষায় পাস না করে চাকরি নিয়েছেন। ২০১১ সালে বিএসইসির নিয়োগের শর্ত ছিল প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) পদে আবেদনের জন্য ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিসহ ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তিনি ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ২০০৬ সালে প্রকৌশল ডিপ্লোমা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কিন্তু চাকরির আবেদনপত্রে ২০০১ সালে পাশের সন উল্লেখ করে ১০ বছরের ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ ব্যবহার করে প্রকৌশলী পদে চাকরি নেন।

পুলিশের তদন্তে উল্লেখ করা হয়, মামুন চাকরির আবেদনের সময় অভিজ্ঞতা ছিল মাত্র তিন বছর ৯ মাস ১৬ দিন। তিনি ভুয়া অভিজ্ঞতা ১০ বছর উল্লেখ করে চাকরি লাভ করেন।

এর আগে গত বছরের ১০ আগস্ট প্রতারণার অভিযোগে কায়কোবাদ আল মামুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। মামুন তদন্ত কমিটির কাছে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব ও আত্মপক্ষ সমর্থিত রিপোর্ট জমা দেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের কাছে সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় বিএসইসির প্রধান প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক প্রধানকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সর্বশেষ বিএসইসির বোর্ডসভায় মামুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিএসইসির সচিব মো. নাজমুল হক প্রধান বলেন, ‘অভিযুক্ত কায়কোবাদ আল মামুন ডিপ্লোমা পরীক্ষা পাস না করে চাকরি নিয়েছেন। অভিজ্ঞতার সনদও ভুয়া। বিএসইসির চাকরি প্রবিধামালায় তাঁর নিয়োগ অবৈধ এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ অপসারণ করা হয়েছে।