চট্টগ্রামের আলোচিত সেই এসআই হেলাল চাকুরিচ্যুত

প্রকাশঃ ২০২০-১০-০৭ - ১৮:৩৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো:চট্টগ্রামের স্কুলছাত্র সালমান ইসলাম মারুফের ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা এবং মা-বোনকে মারধরের পর ছেলেটির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় বরখাস্ত ডবলমুরিং থানার এসআই হেলাল উদ্দিনকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

বিভাগীয় মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকুরিচ্যুত করার এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) আমীর জাফর জানিয়েছেন।

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “তদন্ত কমিটি হেলালকে অভিযুক্ত করায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছিল। সে মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এখন চাকুরিচ্যুত করা হল।”

সালমান ইসলাম মারুফ স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। পড়ার খরচ চালাতে স্থানীয় একটি মার্কেটে বিক্রয়কর্মী হিসেবেও কাজ করত সে।

১৬ জুলাই রাতে ডবলমুরিং থানার বাদামতলীর বড় মসজিদ গলিতে তার বাসায় অভিযানে যান পুলিশ সদস্য এসআই হেলাল।

মারুফের স্বজনদের ভাষ্য, তার কিছুদিন আগে মারুফের বাসা থেকে সাইকেল ও মোবাইল ফোন চুরি হয়েছিল। সেদিন সন্ধ্যায় দুই লোক গিয়ে মারুফের বাসায় উঁকি দিচ্ছিলেন। এসময় মারুফ তাদের ‘চোর চোর’ বলে ধরে ফেলেন।

এরপর এসআই হেলাল পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে মারুফকে মারধর করেন এবং থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ও টাকা দাবি করেন। মারুফের মা ও বোন তখন পুলিশকে বাধা দেন।

যে দু জন বাসায় উঁকি দিয়েছেন, তারা নিজেদের পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দেন। আর তাদের সাথে থাকা এসআই হেলাল ছিলেন সাদা পোশাকে।

সেখানে মারধরের পর কিশোর মারুফের বোন আহত হলে মাসহ তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়, এরপর বাসা থেকে মারুফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে সেই রাতে এসআই হেলালকে প্রত্যাহার করা হয়। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) মনজুর মোরশেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনার চার দিন পর ২০ জুলাই তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।

সেখানে বলা হয়, এসআই হেলাল সাদা পোশাকে অভিযানে গিয়ে মারুফের মা-বোনকে মারধর এবং ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছিলের বলে প্রমাণ মিলেছে তদন্তে।

এসআই হেলাল থানায় অবহিত না করেই অভিযানে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার পাশাপাশি তাকে বরখাস্তের সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।

এদিকে ২৭ জুলাই মারুফের মা বাদী হয়ে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে এসআই হেলালের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন আদালতে।

আর পুলিশের বিভাগীয় মামলার প্রতিবেদনে এসআই হেলালকে বিধি অনুযায়ী ‘গুরুদণ্ড’ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।