ঠাকুরগাঁওয়ে দুই শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

প্রকাশঃ ২০২০-০৬-১৩ - ১৫:২১

ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মোবাইল ফোন চুরির দায়ে গ্রাম্য সালিসে দুই শিশুকে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় পীরগঞ্জ উপজেলার সেনগাঁও ইউনিয়নের দেওধা গ্রামের ইউপি সদস্যসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পীরগঞ্জ থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় শিশু নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

এদিকে, নির্যাতিত শিশু সুমনের মা শরিফা খাতুন অভিযোগ করে বলেন থানায় এজাহার করার ৮ দিন  হলেও পুলিশ  কাউকে গ্রেফতার করতে পাড়েনি । তিনি এই নির্যতনের বিচার দাবি করেন।

শরিফা জানান, তার স্বামীর বড় ভাই মোতালেব আলী তাকে খারাপ প্রস্তাব দেয়। এতে তিনি রাজি হননি। শেষে তাকে ঘায়েল করতে ১১-১২ বছর বয়সী ছেলে সুমন ও চাচাতো দেবরের ছেলে কামরুল ইসলামকে গত ২২শে মে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ আটক করে গ্রামে সালিশ বৈঠক আয়োজন করে।

এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম নেতৃত্বে মোতালেব আলীসহ আরও কয়েকজন আমার ছেলে ও কামরুলের হাত পা বেঁধে লাঠি দিয়ে বেদম মারপিট করে। এতে ওই দুই শিশু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেই চিত্র ক্যামেরায় ধারণ তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে নির্যাতনকারীরা। কিন্তু তাদের দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে টাকার বদলে বাড়ি থেকে একটি গরু নিয়ে যায় তারা । এ ঘটনায় গত শুক্রবার (৫ জুন) পীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের  করেন শরিফা খাতুন।

সুমনের মামা মজিবর রহমান জানান ,থানায় মামলা করায় আসামীরা আমার  বোন ও বোন জামাইকে গুম করে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম বলেন, মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে দুই শিশুর ওপর বর্বর নির্যাতন চলায় ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা। শিশু দুটি চিৎকার করে প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও তাদের পেটানো হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম বলেন, আব্দুল লতিফ নামে এক ব্যক্তির একটি মোবাইল ফোন চুরি করে ওই দুই শিশু। এর আগেও তারা নানা রকম অপরাধ করেছে। পারিবারিক ভাবে তাদের শাসন করা হচ্ছিল। তা ছাড়া যার মোবাইল ফোন চুরি হয় তিনি তাদের ক্ষুব্ধ হয়ে মারপিট করেছেন, আমি না। শরিফা আমার এবং মোতালেবসহ একই পরিবারের ৬ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছে ।

সেনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,  ঘটটি আমি শুনেছি। যদি তারা এটা করে থাতে তাহলে এটা   বড় ধরনের অপরাধ করেছে।

পীরগঞ্জ থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বলেন, শিশুদের নির্যাতন করাটা অন্যায় হয়েছে। মামলার আসামিরা কেউ এলাকায় নেই, তাদেরকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।