ঠান্ডায় খুলনায় শিশু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াা স্যংখ্যা বেড়েছে

প্রকাশঃ ২০১৯-১২-২৪ - ১৮:০৪

কামরুল হোসেন মনি : পৌষের শুরু থেকেই শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল সোমবার দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শীতাকুন্ডুতে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ দিনে খুলনা বিভাগের মধ্যে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো যশোর ও চুয়াডাঙ্গায়। ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আকাশে মেঘ কেটে গেলে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। তবে বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে শীতের তিব্রতা বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সাথে জানুয়ারী প্রথম সপ্তাহে দেশে আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ সম্ভবনা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে খুলনায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। বিশেষ করে শিশুরা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে শুধু খুলনা শিশু হাসপাতালেই ডায়ারিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত দেড় শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন ঠান্ডা জনিত রোগে ২১৬ জন ভর্তি রয়েছে। এছাড়া চলতি মাসের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডায়রিয়ায় ৩২০ ও নিউমোনিয়ায় ৮১ হয়ে শিশুদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
গতকাল সোমবার খুলনা শিশু হাসপাতালের সূত্র মতে, শিশু ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি-জ্বর রোগী বেশি আসছে। প্রতিদিন আউটডোরে ৬শ’ থেকে ৭শ শিশুকে তাদের অভিভাবকরা এনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যার মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বেশি। গত এক সপ্তাহে এ হাসপাতালে ডায়রিয়ায় ১৩০ জন ও নিউমোনিয়ায় ২০ জন শিশুকে ভর্তি করানো হয়েছে। এছাড়া ১লা ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধুমাত্র ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর ভর্তি সংখ্যা ছিলো ৪শ’ জন। বর্তমানে রোগীর চাপের কারণে বেড সংকটও দেখা দিয়েছে।
খুলনা শিশু হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার ডাঃ সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ এ প্রতিবেদককে বলেন, হঠাৎ শীতের প্রকোপ বৃদ্ধিও কারণে ঠান্ডা জনিত ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বৈরী আবহাওয়ার অব্যাহত থাকায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত সেবা নিলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।
খুলনা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ সোমবার দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, গতকাল খুলনায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ছিলো ২২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো শীতাকুন্ডুতে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খুলনা বিভাগের মধ্যে সর্ব নি¤œ তাপমাত্রা ছিলো যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।এর আগে ২০ ডিসেম্বর ছিলো ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২০ ডিগ্রি সেলিসিয়াস, ২১ ডিসেম্বর ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ১৮ ডিগ্রি সেলিসিয়াস এবং ২২ ডিসেম্বরে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, আকাশের মেঘ কেটে গেলে তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। এ মাসের মধ্যেই মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এর ফলে শীতের তিব্রতা বাড়লেও তাপমাত্রা কমবে না। এছাড়া আগামী জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহের দিকে শৈত্যপ্রবাহ সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শিশু হাসপাতালে শিশুপুত্র ফয়সাল (৮ মাস)। ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুটির পিতা জামিরুল ইসলাম তাকে এ হাসপাতালে ভর্তি করান। শিশুটির পিতা এ প্রতিবেদককে বলেন, হঠাৎ ঠান্ডার বেড়ে যাওয়ার কারণে শিশুটি ডায়রিয়া আক্রান্ত হন। ঘন ঘন পায়খানা ও সাথে বমিও করছে। চিকিৎসার পরামর্শে তাকে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে এখন একটু সুস্থ রয়েছে।