ডুমুরিয়ার সাজিয়াড়া (মডেল) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে সাফল্য

প্রকাশঃ ২০১৮-০৪-০৯ - ২০:৫৩

ডুমুরিয়া(খুলনা)প্রতিনিধিঃ প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগ পাশের সাফল্যের পর সদ্য প্রকাশিত প্রাথমিক বৃত্তির ফলাফলে ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী সাজিয়াড়া (মডেল) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১০জন ছাত্র- ছাত্রী ট্যালেন্টপুল ও সাধারন গ্রেডে বৃত্তি পেয়ে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের সাজিয়াড়া (মডেল) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার চুড়ান্ত ফলাফলে ১৪ জন ছাত্র/ছাত্রী জিপিএ ৫, ২০ জন এ গ্রেড সহ পরীক্ষায় অংশ
গ্রহনকারী ৫৭ জন ছাত্র/ছাত্রী সকলেই পাশ করে শতভাগ পাশের সফলতা অর্জন করে। গত ৩ এপ্রিল ঘোষিত বৃত্তির ফলাফলে জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্র/ছাত্রীদের মধ্যে ৭ জন ট্যালেন্টপুলে এবং ৩ জন সাধারন গ্রেডে বৃত্তি পেয়েছে।ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া ছাত্র/ছাত্রীরা হলো শেখ আশরাফুল,জি,এম মাসুদ রানা,মোঃ এহসানুল হক আবির,রশনী তরফদার,শ্রাবনী হালদার,মহুয়া রায় ও প্রমা রাহা। সাধারন গ্রেডে বৃত্তি প্রাপ্তরা হলো নয়ন কুন্ডু,তিশা রায় ও সানজিদা সিদ্দিকা স্বর্না। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে ১৯৪২ সালে ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ডুমুরিয়া বাস স্ট্যান্ড হতে উত্তর দিকে আনুমানিক তিন শত গজ দূরে ফুটবল খেলার মাঠের পূর্বপাশে বিদ্যালয়টি অব¯িহত। বলতে গেলে তৎকালীন অজপাড়া গাঁয়ের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির শিক্ষার মান উন্নয়নে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়ে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রী করনের ফলে আশির দশকে উপজেলা পরিষদ গঠিত হওয়ার পর এবং বিদ্যালয়টি উপজেলা পরিষদের সন্নিকটে হওয়ায় বিদ্যালয়টির গুরুত্ব বেড়ে গেছে অনেক। শুরুতে বিদ্যালয়টি এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টির জন্যে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে বিদ্যালয়টির চিত্র ভিন্ন। উপজেলা সদরে বহিরাগত হিসেবে বসবাসকারি, সরকারি-বেসরকারি সহ বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ীদের ছেলে-মেয়েরা বিদ্যালয়টিতে ভর্তি হয়ে পড়াশুনা করছে। দক্ষ শিক্ষক দ্বারা পাঠদান ব্যব¯হাপনা, পরীক্ষার ফলাফল সহ সার্বিক ব্যব¯হাপনায় সরকারি ভাবে বিদ্যালয়টি ‘মডেল স্কুল’ হিসেবে স্বীকৃতি। শিক্ষার মান্নোনয়ে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে শিক্ষার্থীদের জন্যে যা যা উপকরন প্রয়োজন তার সব কিছু প্রায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমিতে চারিপাশে পাচিল দ্বারা পরিবেষ্টিত একতলা ভবনে পাঠ দানের জন্যে বেশ কয়েকটি শ্রেনি কক্ষ, প্রধান ও সহকারি শিক্ষকদের জন্যে রয়েছে আলাদা রুম। এছাড়া লাইব্রেরী, স্টোর রুম, ক¤িপউটর ল্যাব সহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্যে রয়েছে আলাদা পয়: নিষ্কাষন ব্যব¯হা। সামনে রয়েছে খেলার মাঠ। বিদ্যয়লয়ের সু-সজ্জিত কক্ষে শোভা পাচ্ছে আসবাবপত্র ও দেয়ালে লেখা রয়েছে নৈতিকতা ও উপদেশ মূলক বানী যা শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শিক্ষার অন্যতম সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। রয়েছে বিভিন্ন রকমের দেয়ালিকা যা শিশু শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি কাড়ে। রয়েছে দু¯হ অসহায় মানুষের সহযোগিতার জন্যে মহানুভবতার দেয়াল। শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও সততা শিক্ষার জন্যে খোলা হয়েছে ‘সততা স্টোর। কোন পরিচালক ছাড়া পরিচালিত ওই স্টোর থেকে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরন নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় করে টাকা একটি নির্দিষ্ট বক্সে পরিশোধ করে নিজেদের মধ্যে সততা শিক্ষা গ্রহন করে। জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম মোড়ল তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, বিদ্যালয়টি মডেল স্কুল ঘোষিত হওয়ার পর শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামো তেমন বাড়েনি।যার ফলে আশির দশকে নির্মিত টিনশেড ঘরেও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিদারুন কষ্টে ক্লাস চালাতে হয়। ক্লাস রুমের সংকটের সমাধানের পাশাপাশি স্কুলে সরকারি বা বেসরকারি সহযোগিতা পেলে মিড ডে মিল চালু সহ শিক্ষার মান্নোনয়নে তারা আরো গুরুত্ব পূর্ন রাখতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সব শেষে তিনি স্কুল পরিচালনায় সহযোগিতার জন্যে শিক্ষা বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন,স্কুলের শিক্ষক মন্ডলী,ম্যানেজিং কমিটি ও সাধারন অভিভাবক,কোমল মতি শিশু শিক্ষার্থী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।