তালপাতার পাঠশালায় বর্ণমালা-নামতার পাঠদান

প্রকাশঃ ২০১৯-০৮-১৯ - ১৪:৫২

গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের প্রত্যন্ত এক গ্রাম। সেখানে পরম আনন্দে শিশুরা শিখছে বর্ণমালা, নামতা। আর, লেখার হাতে খড়ি হচ্ছে তালপাতায় খলখাগড়ার তৈরি কলমে। শুকনো তালপাতা, নলখাগড়ার কলম, আর ভাতের হাড়ির কালি; আর তা দিয়েই চলছে শিশুদের লেখাপড়া। এটি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত জামাইবাজার গ্রামের দৃশ্য। প্রায় ৪০ বছর ধরে, মন্দিরের সামনে এই পাঠশালাটি পরিচালিত হয়ে আসছে।

হাতে-মুখে কালি মেখে আনন্দপাঠ হয় এখানে। হাতের লেখা সুন্দর করার আগ্রহ নিয়ে লেখাপড়া করায় স্বচ্ছল পরিবারের সন্তানদেরও এই পাঠশালায় পাঠায় অভিভাককেরা। বর্ণমালা, নামতা ও বানানরীতিসহ প্রাক প্রাথমিকের নানা শিক্ষা দেয়া হয় তালপাতার পাঠশালায়। এখান থেকে হাতেখড়ি নিয়ে শিশুরা যায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তালপাতার পাঠশালায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০ জন। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে পাঠদান চলে বেলা ১টা পর্যন্ত।

স্থানীয় একজন অভিভাবক বলেন, ‘শিশুরা তালপাতায় প্রথমেই এখান পড়াশোনা করেছে।তালপাতায় লিখলে ওদের হাতের লেখা আরও সুন্দর হয়। অনেক ছেলেমেয়ের অভিভাবকরা ম্যাডামকে টাকা দিতে পারেনা। তারপরও ম্যাডাম তাদেরকে শিক্ষাদান করেই যান।’

পরম মমতায় পাঠদান করে চলেছেন তালপাতার পাঠশালার একমাত্র শিক্ষক কাকলী কৃত্তনীয়। তিনি বলেন, ‘এখানে থেকে পড়াশোনা করে বাচ্চারা যে রেজাল্ট করে তা অন্য জায়গার চেয়ে অনেক ভালো হয়।’

তালপাতার পাঠশালার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ার উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মানব রঞ্জন বাছার। তিনি জানান, ‘এখানে যে কার্যক্রমটা দেখছি তা খুবই ভালো। মূল স্রোতে যাওয়ার আগে হাতে কলমে যে বেসিক শিক্ষা, তা নিজেরাই দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।’

পাঠশালাটির মান উন্নয়নের কথা জানান জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুকুমার মিত্র। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বিদ্যালয়টির দিকে হাত বাড়িয়ে আমরা যেন প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে সে বিষয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করবো আমাদের বিভাগ থেকে।’