দাকোপের তিলডাঙ্গায় কালিপূজা অনুষ্ঠিত

প্রকাশঃ ২০১৮-০৩-০১ - ১৪:৪০

দাকোপ(খুলনা) প্রতিনিধিঃ গত মঙ্গলবার ২৭ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাত্রে অনুষ্ঠিত হয়েছে তিলডাঙ্গা শ্মশানকালি পূজা। লক্ষাধিক ভক্তের সমাগমে পূজা প্রাঙ্গন জনসমূদ্রে পরিনত হয়।।
সরেজমিনে দেখাযায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাটির হাঁড়িতে বাতাসা এবং ব্যাগ ভরে বিভিন্ন ধরণের ফল নিয়ে উপজেলা , দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে ভক্তরা বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে পূজা মন্ডপের সামনে আসতে থাকে। দিন গড়িয়ে রাত যত গভীর হয় তত জন-সমাগম জনসমুদ্রে পরিনত হতে থাকে। প্রতিবছর একই দৃশ্য নজরে পড়ে। সারাবছর মানুষ সংসার জীবনে বিভিন্ন প্রাপ্তির জন্য কালি মায়ের কাছে মানদ করে যান । মাও তাঁর মনস্কামনা পূর্ন করেন তাই ভক্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জন-কলরবের মাঝে বার বার মাইকং-এর মাধ্যমে শোনা যাচ্ছিল মায়ের কাছে মানদ করে অমুকের সন্তান হয়েছে, অমুক চাকুরী পেয়েছে, অমুক বড় অসুখ থেকে মুক্তি পেয়েছে, অমুক ব্যবসায় সফল হয়েছেন তাই মায়ের জন্য মানসিক মোতাবেক টাকা, সোনা সহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী নিয়ে এসেছেন। আবার নতুন করে মানদের জন্য শোনা যাচ্ছিল, অমুকের কন্যা সন্তান হলে, অমূকের পূত্র সন্তান হলে, অমূক চাকুরী পেলে আগামী পূজায় মাকে এত টাকা,কানের সোনা, কপালের টিকলি ইত্যাদি দেওয়া হবে।
প্রচুর লোকসমাগম, তাই বর্তমান সাংসদ থেকে উঠতি নেতা কে আসেন নি বলা কঠিন। নির্ধারিত মঞ্চে একের পর এক বিভিন্ন দল ও প্যানেলের নেতারা বক্তব্য করে চলে যাচ্ছেন। দিচ্ছেন সাধ্যমত অনুদান।
এক রাত্রে বহু ভক্তের আগমন তাই প্রচুর ভাতের হোটেল বসে পূজার রাতে। মেলায় খাবারের দোকান থেকে শুরু করে বহু প্রকারের রকমারি দোকানে মানুষের ভীড় লেগে থাকে সারা রাত। প্রপার ম্যানেজমেন্টের জন্য তিলডাংগা ইউনিয়ন পরিষদ,পূজা কমিটি আগের থেকেই প্রস্তুতি সভা করে সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করেণ। মেলায় কোনো হিংসাত্মক ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য দাকোপ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন কড়া নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহন করেণ।
বর্তমান সময়ে পশুবলি অনেক যায়গা থেকে উঠে গেলেও এখানের কালি পূজায় প্রতি বছর পাঠাবলি দেওয়া হয়। পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি বিকাশ কুসুম সরদার ও সম্পাদক গৌতম রায় বলেন, তিলডাঙ্গার শ্মশানকালি পূজার ২২৪ বছর পুর্ন হয়েছে। নড়াইলের জমিদার নৃপেন্দ্র কিশোর রায় এ পূজা প্রথম শুরু করেছিলেন এবং তিনি যেভাবে পূজা করেছিলেন এখনও আমরা সেভাবেই মায়ের পূজা করে চলেছি। হিন্দু, মুসলিম, খ্রীষ্টান সবাই মায়ের কাছে আসেন।সভাপতি পাঠা বলি সম্পর্কে বলেন, এ বলি প্রথা তখন থেকে চলে আসছে তাই আমরা ইচ্ছা করলে এটি পাল্টাতে পারি না। কমিটি সূত্রে জানাযায় এবার পূজায় ৪২৩টি পাঠা বলি দেওয়া হয়েছে। বুধবার বিকাল পর্যন্ত চলেছে প্রসাদ বিতরণ।
সারারাত ভক্তদের কবিগান পরিবেশন করে শুনিয়েছেন কবিয়াল গোরাচাঁদ সরদার ও পরিমল সরদার।