দাকোপের বৃহস্পতি বাজার নদীগর্ভে : “আমরা ত্রান চাইনা, ভাঙনরোধে ব্যবস্থা চাই”

প্রকাশঃ ২০১৯-১০-১৪ - ১২:২৭

আজগর হোসেন ছাব্বির, দাকোপ : অব্যহত ভাঙনে দাকোপের বৃহস্পতি বাজার ১০ লক্ষাধীক টাকার স্থাপনাসহ চলে গেছে নদী গর্ভে। চলমান বিশ্বব্যাংকের প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের রশি টানাটানিতে এলাকাবাসীর জানমাল ঝুকির মুখে। ত্রান চায়না, যে কোন মূল্যে ভাঙন রোধে কার্যক্রর ব্যবস্থা গ্রহন এলাকাবাসীর প্রানের দাবী।
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেড় মাস পূর্বে একরাতে নদী ভাঙনের কবলে বিলীন হয়েছে কালাবগী বৃহস্পতি বাজারের সকল স্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বলা যায় পুরো বাজারটাই এখন সুতারখালী নদীর অংশ। টাকার অংকে স্থাপনা বিলীনের ক্ষতির পরিমান আনুমানিক ১০ লক্ষাধীক। ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা অতীতের ধারাবাহিকতায় সরেজমিন পরিদর্শন আর আশ্বাস ছাড়া কোন কার্যক্রর সহায়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। এখন প্রতিদিন প্রতিনিয়ত অব্যহত আছে সেখানকার ভাঙন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের উত্তর পাশ হতে পন্ডিত চন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়িয়ে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার এলাকায় অব্যহত আছে ভয়াবহ ভাঙন। পরিস্থিতি এমনই পুরো কালাবগী গ্রামটাই হতে যাচ্ছে পাশ্ববর্তী নদীর অংশ। ওই রাতে বাজারের স্থায়ী ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ গাইন, আসাদুজ্জামান মিন্টু গাজী, অধর চন্দ্র বাওয়ালী, শফিকুল সানা, জাহিদ সানা, নজু সরদার, আমজাদ গাজী, খালেক সানা, ফারুক সানা, সাইফুল সরদার, রমেশ দাসের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদী ভাঙনে চলে গেছে। একই সাথে বাজারের পাশে থাকা ঠাকুর দাস, গুরুদাস মন্ডল ও আয়না বেগমের বসতভিটে সমুদয় মালামালসহ ভাঙনে চলে গেছে। বাজারের পাশের জোহরা খাতুন মাদ্রাসা ও রাসেল স্মৃতি সংসদ নদী গর্ভে। বাজার মসজিদের বাথরুমের অংশ নদীর মাঝে আর বারান্দা ছুই ছুই অবস্থায় আছে। এলকাবাসী জানায়, ভাঙনের সংবাদে পরিদর্শনে আসে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য এড. গ্লোরিয়া ঝর্ণা, বর্তমান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ। কিন্তু অদ্যবধী কেবল আশ্বাস ছাড়া তারা ভাঙনরোধে কোন কার্যক্রর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এ ব্যাপারে পৃথক পৃথক ভাবে কথা হয় সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সেখানে বেড়ীবাঁধ নির্মানে কর্মরত বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের প্রকৌশলীদের সাথে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের ভাষ্য, ওই পোল্ডারটি বর্তমানে বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের আওতায় বাঁধ নির্মান চলছে। তারা কাজ শেষে দায়িত্ব হস্তান্তর না করা পর্যন্ত আমাদের সেখানে কিছু করার সুযোগ নেই। অপরদিকে বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা বলছেন, আমরা পূর্বের অনুমোদিত ডিজাইনে বাঁধ নির্মান এবং ভাঙনরোধে ডাম্পিং বা ব্লক ব্যবহার করছি। কিন্তু উল্লেখিত স্থানে ভাঙনরোধের কোন প্রকল্প আমাদের অনুমোদিত ডিজাইনে না থাকায় সেখানে কেবল বাঁধ নির্মান ছাড়া অন্য কিছু করনীয় নেই। অর্থাৎ দু’পক্ষের থাকা না থাকার আইনী জটিলতায় এলাকাবাসীর ঘরবাড়ী সহায় সম্পদ শতভাগ ঝুকির মুখে। এই মুহুর্তে সেখানে ডাম্পিংয়ের পাশাপাশি ব্লক ফেলে ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব এমন মন্তব্য ভুক্তভোগীদের। এলাকাবাসী বলছেন, “আমরা ত্রান চাইনা, বাঁচার তাগিদে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা চাই”।