ধর্ষণ বিরোধী লংমার্চে হামলা, আহত ১০

প্রকাশঃ ২০২০-১০-১৭ - ১৪:০০
ঢাকা অফিস : দেশব্যাপী ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন ও ‍বিচারহীনতার প্রতিবাদে শাহবাগ থেকে নোয়াখালীর একলাশপুরগামী লংমার্চে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (১৭ অক্টোবর) সাড়ে ১১টার দিকে, সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ করার সময় ফেনী শহরের কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এর আগে শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে লংমার্চ কারীরা সমাবেশ করেন।

লংমার্চকারীরা জানান, ধর্ষণের বিরুদ্ধে সমাবেশ ও প্রচারাভিযান করে ফেনী জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের দিকে লংমার্চ যাওয়ার সময় কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গেলে বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী লাঠি নিয়ে হামলা করে। এসময় লংমার্চ কারীদের মধ্যে হৃদয়, শাহাদাত, অনিক, যাওয়াদ ও পথচারীসহ ১০ জন আহত হয়। তাদের দাবি, সমাবেশে সরকার ও ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে বক্তব্য দেয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর পুলিশি পাহারায় হামলা করা হয়েছে।

এর আগে, শহরের শহীদ মিনারের পাশে দোয়েল চত্ত্বরে সমাবেশ চলাকালে স্থানীয় সংসদের ছবির ওপর লাল রঙ লাগিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য লেখাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে লংমার্চকারীদের বাক বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দেশে ধর্ষণ-নিপীড়ন বন্ধসহ নয় দফা দাবিতে তারা শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজধানী ঢাকার শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সমাবেশ করে। সে সমাবেশ থেকে ধর্ষণবিরোধী একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করে। শুক্রবার ১৬ অক্টোবর সকাল সোয়া ১০টার দিকে লংমার্চটি ঢাকার শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে গুলিস্তান আসে। এরপর বাসে করে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া ও সোনারগাঁও, কুমিল্লার চান্দিনা ও শহর, ফেনী আসে। ফেনী থেকে দাগনভূঞা, নোয়াখালীর চৌমুহনী ও একলাশপুরে যাবে। পথে কয়েকটি সমাবেশ হবে। শনিবার বিকেলে নোয়াখালীর মাইজদীতে সমাবেশের মধ্য দিয়ে লংমার্চ শেষ হবে। ছয়টি বাস ও একটি পিকআপে প্রায় ৪০০ মানুষ এই লংমার্চে অংশ নিচ্ছেন নিচ্ছে।এতে স্থানীয় ছাত্র যুবকসহ ভিবিন্নি সংগঠনের কর্মীরা অংশ গ্রহন করে।

‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’–এর নয় দফা দাবির মধ্যে আরও রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের পদত্যাগ, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতনবিরোধী সেল কার্যকর করা, সিডো সনদে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইন ও প্রথা বিলোপ; ধর্মীয়সহ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নারীবিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা, সাহিত্য-নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করা, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে বিটিসিএলের কার্যকর ভূমিকা এবং সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চাকে সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা; তদন্তের সময়ে ভুক্তভোগীকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং তার আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অপরাধবিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অন্তর্ভুক্ত করা, ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা।