পাপিয়া কান্ডে সরব খুলনার রাজনৈতিক অঙ্গন

প্রকাশঃ ২০২০-০২-২৭ - ১১:৩৯

আজগর হোসেন ছাব্বির : দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন আলোচীত নাম শামীমা নুর পাপিয়া। গণমাধ্যম এবং স্যোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল পাপিয়া ইস্যুর প্রভাব পড়েছে খুলনার রাজনৈতিক অঙ্গনে। আলোচীত নারীনেত্রীদের তৎপরতায় ভাটা পড়েছে। নরসিংদী যুব মহিলা লীগের সদ্য বহিস্কৃত নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্থান পতনের বিষ্ময়কর গল্প প্রকাশ্যে আসার পর গোটা দেশ এখন পাপিয়া জ¦রে আক্রান্ত। অতি সাধারণ পরিবারের সন্তান পাপিয়া রাজনৈতিক পদ পদবী এবং অর্থ উপার্জনে কিভাবে অনৈতিক পথে নিজেকে চালনা করেছেন সেই আলোচনা সকল মানুষের মুখে মুখে। পাপিয়া ইস্যু এখন টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। র‌্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট ৩ মাস ব্যাপক অনুসন্ধানের পর গত ২২ফেব্রুয়ারী শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে স্বামীসহ পাপিয়াকে গ্রেফতার করে। প্রশাসনের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে তার উপরে উঠার কাহিনী। এই কাহীনিতে গরীব অসহায় মেয়ে থেকে শুরু করে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী এমপিদের নাম উঠে আসছে। একজন ড্রাইভারের কন্যা থেকে এই অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার পিছনে পাপিয়া সুমন দম্পতিকে যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগীতা করেছেন সকল প্রভাবশালীদের তথ্য এখন গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। যে কোন সময় তারা আইনের আওতায় আসতে পারে এমন আতঙ্ক আর উদ্বেগে দিশেহারা প্রভাবশালীরা। এদিকে সরকারী দলের নারী নেত্রীর এই আলোচীত ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর গোটা দেশের ন্যায় খুলনার রাজনৈতিক অঙ্গনে ও তার প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের আলোচীত নারী নেত্রীদের তৎপরতায় ভাটা পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির সাধারণ নেতাকর্মিরা বলেন, অনুসন্ধান করলে খুলনার রাজনীতিতে পাপিয়ার মত অনেক নেত্রীর খোঁজ পাওয়া যাবে। যারা অনেক সময় বিভিন্ন সভা সমাবেশে দলের সিনিয়র নেতাদের থেকেও নানা তৎপরতায় ছিল অগ্রগামী। এদের কারনে পরিচ্ছন্ন ইমেজের রাজনৈতিক নেতাকর্মি নিজেদের গুটিয়ে রাখতে বাধ্য হয়। প্রভাবশালী নেতাদের অফিস কিংবা বাসায় তদ্বির বাণিজ্যে এরা ছিল অনেকের থেকে এগিয়ে। আলোচীত বসন্তের কোকিল এসকল নেত্রীদের অধিকাংশই ক্ষমতায় আসার পর হঠাৎ আবিভূত হয়। তাদের দাপটে কোনঠাসা হয়ে পড়ে ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতাকর্মীরা। ফলে খুলনা মহানগরের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ধিরে ধিরে দলের রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন তারা, এমন অভিযোগ খোদ দলীয় নেতাকর্মিদের। দলটির সাধারণ নেতাকর্মি দলের মাঝে এমন শুদ্ধি অভিযানে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, অভিযানের ব্যাপ্তি দেশব্যাপী করতে পারলে সাধারণ মানুষের কাছে আওয়ামীলীগের গ্রহনযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে। কেবল ক্ষমতাসীনদল নয়, পাপিয়াকান্ডে বিব্রত খুলনার বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলের আলোচিতরা। বর্তমানে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির জেলা মহানগর কার্যালয় ও তার আশপাশ এলাকায় নেতাকর্মিদের জটলায় ঘুরে ফিরে আলোচনায় আসছে পাপিয়া ইস্যু। অপরদিকে দুটি দলেরই ওই সকল আলোচীত নারী কর্মিদের দলীয় কার্যালয়ে আনাগোনায় কিছুটা ভাটা পড়েছে। গত ২ দিন মহানগরীতে বড় দুটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে নারী কর্মিদের কম উপস্থিতি যেন সে কথায় বলে দিচ্ছে।