ফুলতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুরিকাঘাতে ডাঃ উত্তম দেওয়ান গুরুতর জখমঃ ছুরিসহ উপ-সহকারী মহাসিন আটক

প্রকাশঃ ২০২০-০২-০৩ - ২১:৩০

তাপস কুমার বিশ্বাস, ফুলতলা অফিসঃ খুলনার ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সোমবার সকালে সদ্য বদলীকৃত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মহাসিন গাজীর ছুরিকাঘাতে কর্তব্যরত ডাঃ উত্তম কুমার দেওয়ান গুরুতর জখম হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় হাসপাতালের কর্মচারীরা হামলাকারী মহাসিন গাজীকে ছুরিসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল থেকে হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু) ডাঃ উত্তম কুমার দেওয়ান ৩৬ নম্বর রুমে বসে রোগী দেখছিলেন। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের সময় ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সদ্য বদলীকৃত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মহাসিন গাজী (৩৫) পিয়ন হাসিবকে ধাক্কা দিয়ে ঐ পক্ষে প্রবেশ করে ডাঃ উত্তম কুমার দেওয়ানের উপর উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এ সময় ডাঃ উত্তম বাম হাতের কনুইয়ের উপর, কপাল ও মাথায় জখম হন। হাসপাতালের কর্মচারীরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। ঘটনার পরপরই হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় মোঃ আশরাফ ও এম্বুলেন্স চালক মিরাজ হামলাকারী মহাসিন গাজীকে ছুরিসহ জাপটে ধরেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এদিকে ডাঃ উত্তম কুমার দেওয়ান প্রকাশ্য দিবালোকে নিজ কক্ষে চুরিকাঘাতে জখম হওয়ায় হাসপাতালে অন্যান্য ডাক্তার ও কর্মচারীরা আতর্কিত হয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে সমবেত হয়। এ সময় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শেখ কামাল হোসেন, ওসি (তদন্ত) উজ্জল কুমার দত্ত , জেলা আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ আসলাম খান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার শাহাবুদ্দিন জিপ্পীসহ নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ও নিয়মিত পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থায় হাসপাতালের কার্যত্রম স্বাভাবিক হয়।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শেখ কামাল হোসেন বলেন, গত ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হিসেবে মহাসিন গাজী যোগদান করেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দাপ্তরিক অভিযোগ থাকায় কর্তৃপক্ষ তাকে গত ৫ জানুয়ারী নড়াইল সদরের বাঁশখালী ইউনিয়ন সাব সেন্টারে বদলী ও ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। হাসপাতাল অফিস সূত্র জানায়, মহাসিন গাজী সার্ভিস বুক নিতে গতকাল সকালে হাসপাতালে আসে। এখানে থাকাকালীন সময়ে ডাঃ উত্তম কুমার দেওয়ান ও মহাসিন গাজী পাশাপাশি কক্ষে বসে রোগী দেখতেন। পূর্বের মনোমালিন্যের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহম্মাদ বলেন, জরুরী কাজে খুলনার বাইরে ছিলাম। দুঃখজনক ঘটনাটি শুনতে পেরে খুলনার পুলিশ সুপার ও নড়াইলের সিভিল সার্জনকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শেখ কামাল হোসেন নিজেই বাদী হয়ে মহাসিন গাজীর বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। ওসি (তদন্ত) উজ্জল কুমার দত্ত বলেন, প্রয়োজনীয় আলামত জব্দ ও আসামী আটক রয়েছে । মামলা প্রস্তুতি চলছে।