বটিয়াঘাটায় কৃষকদের মেহগনি ফলের নির্জাস দিয়ে তৈরী জৈব কীটনাশক ব্যবহার

প্রকাশঃ ২০১৮-১০-১১ - ১১:৪৮

বটিয়াঘাটা প্রতিনিধিঃ বটিয়াঘাটা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকেরা মেহগনি ফলের নির্জাস দিয়ে তৈরী জৈব কীটনাশক ব্যবহার ফলে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনে দিকে ঝুকে পড়ছে। ফলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কৃষিতে এসেছে এক নতুন সাফল্য। বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামে প্রায় ৮০ বিঘা জমিতে রাসায়নিক কীটনাশক ছাড়াই চাষ করা হয়েছে আমন ধান। এছাড়া উপজেলার জলমা ইউনিয়নে শুড়িখালী গ্রামের কৃষকেরাও রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে মেহগনি ফলের নির্জাস দিয়ে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করছে। এধরনের চাষাবাদ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগীতায়। জৈব কীটনাশক ব্যবহার করায় উৎপাদিত ফসল যেমন স্বাস্থ্যসন্মত ও নিরাপদ, তেমনি খরচও অনেক কম। অন্যদিকে এ সকল ফসলের চাহিদা ও ক্রেতাদের কাছে অনেক বেশী। ১বিঘা আমন ধানের জমিতে রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগ খরচ হয় ১ হাজার থেকে ১২শত টাকা। অপর দিকে জৈব কীটনাশকের খরচ নেই বললেই চলে। ১ কেজি মেহগনি ফলের ভিতরে শ্বাস বের করে ভালো পিশে ফেলে ৫লিটার পানিতে ২/৩দিন ভিজিয়ে রেখে পরে তা ছেকে নিয়ে ১ গ্রাম রসের সাথে ১০ লিটার পানি, ১০গ্রাম সোহাগা এবং ২০গ্রাম ডিটারজেন্ট পাউডার মিশ্রিত করে স্প্রে করতে হবে। ধান রোপনের ১মাস পর থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করলেই মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, গান্ধি পোকা, খাটোসুর, ঘাস ফড়িং, বাদামি গাছ ফড়িং সহ ধানের বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা দমনে এ জৈব কীটনাশক খুবই ফলপ্রসু। বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের কৃষক মোঃ আলম (খোকন) জানান, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জীবানন্দ রায়ের পরামর্শে আমরা ৪০/৫০জন কৃষক এক যোগে রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে মেহগনি ফলের কীটনাশক ব্যবহার করছি। এতে যেমন খরচ কম, তেমনি আমাদের শরীরিরে জন্যেও নিরাপদ। অন্যদিকে উৎপাদন ভালো। কৃষক গোলাম মোস্তফা, খাইরুল আলম, মিকাইল সরদার সহ অনেকেই জানান, প্রথমে একটু অনিহা থাকলেও দিন দিন এর প্রতি অন্য কৃষকদেরও আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ রবিউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট ব্লাকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার উদ্বুদ্ধ করন কর্মসূচী উপজেলার নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য টেকসই জৈব কৃষি প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছে। কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করনের মাধ্যমে গত কয়েক বছর ধরে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করেছি এবং কৃষকদের জৈব কীটনাশক ব্যবহারে আগ্রহ বাড়ছে। যার ফলে সরকার প্রদত্ত সার ও কীটনাশক খাতে ভর্তুকীর পরিমান কমিয়ে আনা সম্ভব।