বন্দির হামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী অমিত মুহুরীর মৃত্যু

প্রকাশঃ ২০১৯-০৫-৩০ - ১২:৩৬

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী অমিত মুহুরী। বুধবার রাতে কারাগারের সেলে এক বন্দির ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হন অমিত। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ভাঙচুর চালিয়েছে অমিতের অনুসারীরা।

২০১৩ সালে চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় রেলের টেন্ডার নিয়ে যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে শিশুসহ ২ জন নিহত হয়। এরপরই অপরাধ জগতে অমিত মুহুরীর নাম ছড়িয়ে পড়ে। বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর বাবরের হাত ধরে তার উত্থান। এরপর হয়ে উঠে ভয়ংকর এক সন্ত্রাসী।  পুলিশের হাতে আটক হওয়ার আগে ঝাউতলা এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করতে দেখা যায় অমিত মুহুরীকে।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছাত্রলীগ নেতা ইয়াছিনকে আমতলা এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করে অমিত।  এরপর আগস্টে নিজ বাসায় বাল্যবন্ধু যুবলীগ কর্মী ইমরানুল করিমকে খুনের পর ড্রামে ঢুকিয়ে এসিডে পুড়িয়ে ও সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে মরদেহ গুম করার চেষ্টা করে।  এ ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  এরপর থেকে কারাগারই ছিলো অমিতের ঠিকানা।

বুধবার রাত ৯টার দিকে কারাগারের ৩২ নম্বর সেলে রিপন নামের এক বন্দি অমিতকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মৃত্যু হয় তার।

অমিত মুহুরীর বাবা অজিত মুহুরী বলেন, ‘আমরা এসে দেখি সে মৃত। দেখলাম মাথায় ব্যান্ডেজ করা, মনে হচ্ছে পেছন থেকে কেউ এসে হয়তো মাথায় মেরেছে।’

খবর পেয়ে অমিতের অনুসারীরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। এতে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ সময় হাসপাতালে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

সিএমপি উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বশাক বলেন, ‘জেলখানায় আহত অবস্থায় তাকে এখানে নিয়ে আসা হয়, এবং এখানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এর পর তার অনুসারিরা তাৎক্ষণিক উত্তেজনায় এখানে কিছু ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। পরে আরও বেশি পরিমাণ পুলিশ নিয়ে এসে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।’

এ ঘটনায় চট্টগ্রাম কারাগারে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

কারারক্ষী আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমার ওখানে ডিউটি ছিলো, আমি এই অবস্থায় (আহত) তাকে এখানে নিয়ে এসেছি।

র‌্যাব ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী অমিত মুহুরীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় তিনটি হত্যাসহ ১৪টি মামলা রয়েছে।