বহিরাগতদের অবৈধ দখলে খুলনা মেডিকেলের কোয়ার্টার : পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকিপূর্ন বসবাস

প্রকাশঃ ২০২০-০২-০৯ - ১৩:০৯

আজগর হোসেন ছাব্বির : খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোয়ার্টার গুলো বহিরাগতদের অবৈধ দখলে। পরিত্যক্ত ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করছে বসবাস। প্রতি মাসে সরকারী কোষাগার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার পানি ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ হচ্ছে। বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই।
সংশ্লিষ্ট ভবন গুলোতে বসবাসকারী এবং মেডিকেল কলেজ প্রশাসনের একাধীক সুত্র জানায়, বর্তমানে সেখানে সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের বসবাসের জন্য ২৩ টি কোয়ার্টার ভবন আছে। নিয়ম অনুযায়ী ৫শ’ থেকে ৮শ’ স্কয়ার ফুটের ভবনগুলো ৩য় এবং ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ। আর ১ থেকে দেড় হাজার স্কয়ার ফুটের ভবনগুলো ডাক্তারসহ কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন হিসেবে বরাদ্দ থাকার কথা। খোজ নিয়ে জানা যায়, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এবং উপধ্যক্ষ নিজেদের ভবনে না থাকায় সেখানে বসবাস করছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও তাদের আত্মীয় স্বজনরা। ভবনটিতে বর্তমানে দিদারুল ইসলাম রিপন এবং আঃ হাই নামের ৪র্থ শ্রেনীর দুই কর্মচারী পরিবার এবং তাদের স্বজনদের নিয়ে বছরের পর বছর দখলে রেখে বসবাস করছেন। ড্রাইভার কামরুল ইসলাম দ্বিতল একটি ভবন একাই দখলে রেখেছেন ১০/১২ বছর। অনুরুপভাবে ডাক্তারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দের ভবনগুলো অধিকাংশ রয়েছে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী আর বহিরাগতদের অবৈধ দখলে। সে ক্ষেত্রেও আছে ভিন্ন অভিযোগ। অধিকাংশ বসবাসকারীদের নামে কাগজপত্রে কোন বরাদ্দ নেই। মেডিকেল কলেজের ৩য় শ্রেনীর পদ মর্যাদার ক্যাশিয়ার রুহুলামিন, ব্লাড ব্যাংকের আবুল কালাম আজাদ. মেডিকেল টেকনোলোজিষ্ট আনোয়ার হোসেন, আর্টিষ্ট মাহফুজুর রহমানসহ আরো কয়েকজন নিজেদের কক্ষে রীতিমত এসি লাগিয়ে ব্যবহার করছেন। জানতে চাইলে ক্যাশিয়ার রুহুলামিন বলেন, তার স্ত্রীর অসুস্থতায় চিকিৎসকের পরামর্শে এসি ব্যবহার করছেন। ক্ষমতাসীনদলের পরিচয়ে রুমান আহম্মেদ, হিন্দু বৈদ্য খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতা প্রবির রায়, বেলায়েত নজরুল, কাওছার, মহসিনসহ আরো অনেকেই বহিরাগত হয়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোয়ার্টার বছরের পর বছর অবৈধভাবে দখলে রেখেছেন। ভবনের মুল ফটকে পরিত্যক্ত ঘোষনার সাইনবোর্ড, অথচ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন অনেক পরিবার। তাদেরই একজন মেডিকেল কলেজের নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কালাম আজাদ। বিদ্যুৎ পানির বিল কে পরিশোধ করছে জানতে চাইলে কোন সদুত্তর মেলেনি। অথচ নিয়ম অনুযায়ী পরিত্যক্ত ভবন গুলোতে বিদ্যুৎ পানির সংযোগই থাকার কথা না। জানা গেছে অধ্যক্ষের পক্ষে ষ্টোরকিপার মঞ্জু মূলত এই ভবন বরাদ্দসহ সব কিছু দেখভাল করে থাকেন। একদিকে সরকারী কোষাগারে ভাড়ার টাকা জমা হচ্ছেনা, অপরদিকে প্রতিমাসে এই অবৈধ বসবাসকারীদের জন্য কর্তৃপক্ষকে দিতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার পানি ও বিদ্যুৎ বিল। নিয়ম অনুযায়ী অডিট হয়ে আসছে, কিন্তু এ সকল দূর্ণীতি অনিয়মের কোন প্রতিকার হচ্ছেনা। এ যেন সরকারী সম্পদের হরিলুট। বৈধ কর্মকর্তা কর্মচারীরা সেখানকার অবৈধ দখলমুক্ত, দুর্ঘটনা এড়াতে পরিত্যক্ত ভবন থেকে বসবাস কারীদের নামিয়ে দেওয়া এবং সরকারী অর্থের অপচয় রোধ করতে সংশ্লিষ্ট উপর মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উল্লেখিত বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজ অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ আব্দুল আহাদ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যাদের নাম বলা হয়েছে তারা সকলে বহিরাগত না। আর পরিত্যক্ত ভবন থেকে ওদের বার বার নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু অনেকে আবার সেখানে থাকে। সুতরাং সেখানে বসবাসে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তার দ্বায় দায়িত্ব কলেজ কর্র্তৃপক্ষ নিবেনা। একই সাথে ওই ভবনে বৈধ কোন বিদুৎ সংযোগ নেই বলে তিনি দাবী করেছেন।