বাগেরহাটে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু!

প্রকাশঃ ২০১৯-০৮-২৭ - ২১:১৭

বাগেরহাট : বাগেরহাটে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শাহানাজ পারভিন (৩০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সন্ধ্যায় বাগেরহাট শহরের পুরাতন বাজার এলাকার পলি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা ওই ক্লিনিক ঘিরে হইচই এবং ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ-চিকিৎসকের বিচার দাবি করেন। নিহত শাহানাজ পারভিন জেলার শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা এলাকার রাজু পাইকের স্ত্রী। তারা দু’জনেই চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। সোমবার রাত ১১টা পর্যন্ত নিহতের মরদেহ ক্লিনিকেই ছিল। নিহতের বোন নারগীস আক্তার জানান, ডেলিভারির জন্য সোমবার তার বোনকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এরপর দুপুর ৩টার কিছু পরে ক্লিনিকের সত্ত্বাধিকারী ও পরিচালক ডা. সুনীল কুমার দাস তার সিজারিয়ান অপারেশন  করেন। একটি ছেলে সন্তান হয় শাহানাজের। তবে অপারেশন শেষে প্রায় পৌনে ৬টার দিকে তাকে ওটি থেকে বের করা হয়। বেশ কিছুক্ষণ সে সুস্থ ছিল। ৬টার কিছু পরে তার খিঁচুনি শুরু হয়। সে সময় কয়েক দফা ডাক্তার ও নার্সদের ডাকা হলেও তারা রোগীর কাছে আসেননি। কিছুক্ষণ পর শাহানাজের মুখ থেকে লালা বের হয়। তখন ডাক্তার ও সেবিকারা এসে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে সে মারা গেছে। তখন ডাক্তার মৃত্যুর খবর গোপন করে রোগীকে স্যালাইন দিয়ে খুলনাতে নিয়ে যেতে বলেন। নিহতের ফুফু সুফিয়া আক্তারের অভিযোগ, সিজার করবেন বলে ৮ হাজার টাকায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়। সেইভাবে তারা সিজারও করেন। কিন্তু মেয়েটারে মেরে ফেলার পর তারা খুলনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের চাপ দেয়। ঘটনার পর স্বজন ও স্থানীয়রা ওই ক্লিনিকে জড়ো হলে এ সময় কিছুটা উত্তেজনাও দেখা দেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. সুনীল কুমার দাস বলেন, আমাদের তরফ থেকে কোনো ধরণের অবহেলা ছিল না। ওই প্রসূতি ‘একলামসিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আমরা স্বজনদের সঙ্গে কথা বলছি। তারাও এখন বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জি কে এম শামসুজ্জামান মঙ্গলবার বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে জানতে  তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাতাব উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। স্থানীয় জনতার মধ্যে উত্তেজনা ছিল। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।