ভাাইয়ের স্ত্রীর লাশ ৫ টুকরো করে নদীতে ফেলার কথা স্বীকারাক্তি

প্রকাশঃ ২০১৮-০৫-২০ - ২০:৫৭

ঝালকাঠি প্রতিনিধি: অবশেষে ঝালকাঠির রাজাপুরে চাঞ্চল্যকার গৃহবধূ সীমা হত্যা মামলার পলাতক আসামী সেই মো. সবুজ খন্দকারকে (৪৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার এক বছর পরে এজাহারের দুই নম্বর আসামী সবুজ খন্দকারকে গ্রেপ্তার করা হলো

শনিবার বিকেলে রাজাপুর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাগেরহাট সদর থানা পুলিশের সহায়তায় নতুন বাসস্টান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ। গ্রেপ্তার সবুজ খন্দকারকে শনিবার রাতেই তাকে রাজাপুর থানায় নিয়ে আসা হয়।

রাজাপুর থানার ওসি মো. শামসুল আরেফিন জানান, আসামিকে বাগেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবুজসহ আসামীরা ওই গৃহবধূর লাশ ৫ টুকরে করে জাঙ্গালিয়া নদীতে ফেলে ঘুমের কথা পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ স্বীকার করেছে। তাকে ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করলে আদালতে লাশ ঘুমের জন্য টুকরো করে নদীতে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে তিনি জানান।

গৃহবধূ সীমা হত্যার পরেই এ মামলার প্রধান আসামী সীমার স্বামী মিজান খন্দকারকে বিদেশে যাওয়ার পথে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মিজান খন্দকার ও সবুজ খন্দকার আপন ভাই। তাদের বাড়ি উপজেলার বাঘড়ি বাঁশতলা এলাকায়। তারা ওই এলাকার কাশেম খন্দকারের ছেলে।

জানা গেছে, মোবাইল ফোনে প্রেমের মাধ্যমে ৩ বছর পূর্বে উপজেলার বাশতলা গ্রামের কাসেম খন্দকারের ছেলে প্রবাসী মিজান খন্দকারের সাথে পিরোজপুরের খামকাটা গ্রামের মৃত আমজেদ হোসেনের মেয়ে সীমা আক্তারের বিয়ে হয়। সীমা মিজানের দ্বিতীয় স্ত্রী। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাজাপুরে আলাদা বাসা ভাড়া করা হয়েছে বলে সিমাকে তার বাবার বাড়ী পিরোজপুর থেকে রাজাপুরে নিয়ে আসে মিজানের বন্ধু সাউথপুর গ্রামের এনায়েত গোমস্তার বাড়িতে সীমাকে নিয়ে ওঠেন মিজান।

গত ৩০ মার্চ সিমা মুঠোফোনে তার ছোট ভাই বাদশাকে জানায়, সে বিপদের মধ্যে রয়েছে। এরপর সিমার আর কোন খবর পায়নি সীমার পরিবার। পরে ওই রাতেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর অসুস্থ্য বলে প্রবাসী মিজান তার ভগ্নিপতি মিজানের অটোরিক্সায় করে মিজানের গ্রামের বাড়ি বাশতলায় লাশ নিয়ে এসে লাশ বাড়িতে রেখে মিজান বিদেশে যাওয়ার জন্য ঢাকা চলে যায় এবং মিজানের ভাই সবুজ খন্দকারসহ আসামীরা সীমার লাশ একদিন রান্না ঘরে রেখে ওইদিন রাতে লাশ টুকরো টুকরো করে বস্তাায় ভর্তি করে নদীতে ফেলে দেয়। পরদিন এনায়েত গোমস্তা রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে তাদের না পেয়ে খোজ নিয়ে জানেন মিজান তার স্ত্রী সীমাকে খুন করে পালিয়ে বিদেশ যাচ্ছেন, সে অনুযায়ী এনায়েত ঢাকায় গিয়ে ০১ এপ্রিল মিজানকে ধরে মতিঝিল থানায় সোপর্দ করে এবং ঢাকার মতিঝিল থানা পুলিশের কাছে মিজান সিমাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। পরে নিহত সিমার বড় ভাই মাজেদুর ইসলাম বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে ২ এপ্রিল রাজাপুর থানায় হত্যা মামলা (নং-১) দায়ের করেন। মামলায় স্বামী মিজান খন্দকার, তার ভাই সবুজ খন্দকার, বোন শাহনাজ বেগম ও তার ভগ্নীপতি মিজান হাওলাদারকে আসামী করা হলেও এনায়েতকে আসামী করা হয়নি।