মঙ্গলবার থেকে বেকারি মালিকরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাজারজাত করার সিদ্ধান্ত

প্রকাশঃ ২০২০-০২-০৩ - ১৭:০৫

স্টাফ রিপের্টার : বেকারির পন্য বাজারজাতে নিয়োজিত হকাররা বেকারির পণ্য সামগ্রী আজ সোমবার থেকে বাজারজাত না করে তাহলে আগামী মঙ্গলবার ( ৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে খুলনার বেকারি মালিকরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তাদের উৎপাদিত বাজারজাত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রোববার বেকারি মালিকগণ ও হকার্স ইউনিয়নের সাথে বৈঠকের পর বেকারি মালিক সমিতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সাধারণ জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বেকারি মালিকরা এই সিদ্ধান্ত পৌছায়ছেন।
এর আগে বৈঠকে হকারদের আজ সোমবার থেকে বেকারি পণ্য বাজারজাত করার জন্য আল্টিমেটাম দেন খুলনা বেকারি মালিকরা। বৈঠকে বেকারি মলিকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী মঙ্গলবার থেকে বেকারির মালিকরা নিজস্ব বেতন ভুক্ত কর্মচারিদের দিয়ে নগীরর বিভিন্ন দোকানে ও চায়ের দোকানে পাইকারি প্রতি পিস বনরুটি ৪টা ৪০ পয়সা, প্রতি পিস নান রুটি ৪ টাকা ৮০ পয়সা, প্রতি পিস স্পেশাল কেক ৫ টাকা ৪১ পয়সা এবং পাউরুটি (এক পাউন্ড) ২০ টাকার বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন।
গতকাল রোববারও বেকারি পন্য বাজারজাত না করা হকার্স ইউনিয়নের অঘোষিত এই সিদ্ধান্তের ফলে মহল্লার চায়ের দোকান ও মুদি দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় বেকারি পণ্য সামগ্রী পাওয়া যায়নি। ফলে স্কুল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দুর্ভোগে পড়েছেন। হকার্সদের অঘোষিত এ সিদ্ধান্তের ফলে তাদের ছেলেমেয়েদের টিফিনের জন্য বেকারি পণ্য কিনতে না পেরে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে বেকারি মালিক সমিতির সভাপতি মো: শামসুল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, বেকারি কাচা মালের পণ্যর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদিত ৫০টির মধ্যে ৪টি পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাতে বেকারির পণ্য তৈরির গুনাগতমান ঠিক থাকে। দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের পাশাপাশি একই সাথে সকল বেকারি মালিকদেরকে বেকারির সকল পন্যগুলো গুনগতমান ঠিক রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। দাম বৃদ্ধি বিষয়ে হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি ও সেক্রেটারি উপস্থিতিতে এক আলোচনা মাধ্যমে সিদ্ধান্তটি গৃহিত হয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে হকার্স ইউনিয়ন তারা অঘোষিতভাবে আমাদের এই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন না করে বাজারজাত থেকে বিরত থাকেন। এতে সাধারণ জনগণ বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন। বেকারি মালিকদের সাথে হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি ও সেক্রেটারি সাথে গতকাল বৈঠক হয়। তাদেরকে সোমবার থেকে আমাদের বেকারি পণ্য বিক্রির জন্য আল্টিমেটাম দেই। তারা যদি এ সময়ের মধ্যে বাজারজাত না করে তাহলে আমাগী মঙ্গলবার থেকে বেকারির মালিকরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় খুলনায় মুদি দোকান ও চায়ের দোকানে তাদের পন্য বিক্রি করার সিদ্বান্ত নিয়েছেন। যাতে পরবর্তীতে সাধারণ জনগণ ভোগান্তীতে না পড়েন। সে অনুযায়ী তাদের নিজস্ব কর্মচারিদের দিয়ে পাইকারি প্রতি পিস বনরুটি ৪টা ৪০ পয়সা, প্রতি পিস নান রুটি ৪ টাকা ৮০ পয়সা, প্রতি পিস স্পেশাল কেক ৫ টাকা ৪১ পয়সা এবং পাউরুটি (এক পাউন্ড) ২০ টাকার বিক্রি করবেন।
বেকারি মালিকরা জানান, তাদের উৎপাদিত ৫০ টি অধিক পণ্যের মধ্যে ৪টি পণ্যে দাম বৃদ্ধি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই ৪টি বেকারি হকার্স ইউনিয়ন সেক্রেটারি ও সভাপতি উপস্থিতিতে সবার অনুমতি ক্রমে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্তটি হওয়ার পরেও একটি কু-চক্র মহলের ইন্ধনে হকার্স ইউনিয়ন সদস্যরা বেকারির পণ্য বাজার জাত করা থেকে হকাররা বিরত রয়েছেন। এটা একটা ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করি যাতে এই শিল্প ধ্বংসের দিকে যায়। বর্তমানে খুলনা জেলায় ৮০-১০০টির মধ্যে বেকারির উৎপাদিত পণ্যর কারখানা রয়েছে। এতে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। যাদের বেতন ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। অনেক পরিবারের সদস্যরা এই শিল্পে নিয়োজিত থেকে পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দিচ্ছেন। এ শিল্পটা ধ্বংস হলে অনেকে পরিবার-পরিজনরা পথে বসবেন।
উল্লেখ্য, গত দেড় মাসে ব্যবধানে বেকারি পণ্য কাচা মালের দাম অস্বভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে পামওয়েল তেল কেজিতে ৩৪ টাকা, চিনি বস্ত প্রতি ৯৫০ টাকা, ময়দা বস্তা প্রতি ২০০ টাকা এবং ডালডা বস্তা প্রতি ২৯০ টাকায় বৃদ্ধি পায়। বেকারী উৎপাদিত পণ্য তৈরি করতে এই কাচা পণ্য গুলোতে সব চেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। অস্বভাবিকভাবে এইসব কাচা পণ্যর মুল্য বৃদ্ধি: হওয়া বেকারি মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। বেকারি মালিকরা ব্যবসা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তাদের উৎপাদিত ৫০ টি অধিক পণ্যের মধ্যে ৪টি পণ্যে দাম বৃদ্ধি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পণ্যে গুলো হচ্ছে বন রুটি খুচরা মুল্য ৫টাকার পরিবর্তে ৬ টাকা, নান রুটি ৬ টাকার পরিবর্তে ৭টাকা, পাউরুটি (সাইজ) প্রকার ভেদে ২৫ থেকে ২৮ টাকা এবং স্পেশাল কেক ৬ টাকার পরিবর্তে ৮টাকা বৃদ্ধি করা হয়। এই ৪টি বেকারি হকার্স ইউনিয়ন সেক্রেটারি ও সভাপতি উপস্থিতিতে সবার অনুমতি ক্রমে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।