মাতৃভাষা দিবসে এবার খুলছে না সীমান্ত গেট!

প্রকাশঃ ২০২১-০২-১৮ - ১৮:১২

বেনাপোল : করোনার কারণে এবার বেনাপোলে খুলছে না সীমান্ত গেট। ২০০২ সাল থেকে বেনাপোল চেকপোস্টের জিরো পয়েন্টে বনগাঁর কিছু সংস্কৃতিকর্মী ‘একুশে উদযাপন কমিটি’ গড়ে অনুষ্ঠান করা শুরু করেন। তখন থেকেই বছরের একদিন ২১ ফেব্রুয়ারি গেট খুলে দেওয়ার প্রথা চালু হয়। পরে সিপিএম এমপি অমিতাভ নন্দীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেয় ‘গঙ্গা-পদ্মা মৈত্রী সমিতি’। রাজ্যে পালাবদলের পর নিয়ন্ত্রণ যায় তৃণমূল প্রভাবিত ‘দুই বাংলা মৈত্রী সমিতি’র হাতে। যার প্রধান উদ্যোক্তা পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন ও বেনাপোল পৌরমেয়র আশরাফুল আলম লিটন। প্রথমদিকে স্থানীয় এমপি-মেয়রের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান হলেও ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাদের দ্বন্দ্বের কারণে এমপিকে বাদ দিয়ে মেয়র একাই অনুষ্ঠান করে আসছিলেন। সর্বশেষ, ২০১৯ ও ২০২০ সালে মেয়রকে বাদ রেখে এ অনুষ্ঠান করছেন এমপি অনুসারীরা। সোমবার বেনাপোল-পেট্রাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে আয়োজিত এক সৌহার্দ্য সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন দু’দেশ (ভারত-বাংলাদেশ)’র জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে এবার যথাযোগ্য মর্যাদায় ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান জানানোসহ স্বল্প পরিসরে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ভৌগলিক সীমারেখা ভুলে কেবলমাত্র ভাষার টানে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া উপেক্ষা করেই দলে দলে যোগ দেন একুশের মিলনমেলায়। ভারত-বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশ নেয় এ অনুষ্ঠানে। এ সময় পেট্রাপোল ও বেনাপোল চেকপোস্টে ঢল নামে হাজার হাজার মানুষের। কিন্তু এবারের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে এই দৃশ্য আর দেখা যাবে না। এতোদিন দু’দেশের সরকারি প্রতিনিধি ও মন্ত্রীরা প্রতিবেশী দেশে গিয়ে শহীদবেদিতে পুষ্পার্ঘ দিতেন। করোনার কারণে এবার যৌথভাবে একুশের কোনো অনুষ্ঠান নোম্যান্সল্যান্ডে হবে না। তবে, ওপারে ছোট একটা অনুষ্ঠান হবে। সেখানে স্থানীয় সাংসদসহ বাংলাদেশের ১০০ জনকে তারা আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। করোনা থেকে সতর্ক থাকতে উভয় দেশের প্রশাসনও রাজি নয় করোনার মধ্যে এ অনুষ্ঠান করতে। এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে উভয়দেশের নেতৃবৃন্দের সাথে। এ ব্যাপারে দুই বাংলার একুশ উদযাপন কমিটির বেনাপোলের আহবায়ক উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, এবার বেনাপোল চেকপোস্ট নোম্যান্সল্যান্ডে দু‘দেশের একুশের মিলনমেলা হচ্ছে না। করোনার কারণে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে উভয়দেশের আয়োজকরা আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে, পেট্রাপোল ছোট একটি অনুষ্ঠান হবে।