মুক্তিপনের দাবীতে দাকোপের ৪ জেলে বনদস্যুদের কাছে জিম্মি

প্রকাশঃ ২০১৭-১২-১৩ - ২২:৩৭

আজগর হোসেন ছাব্বির, দাকোপ : দাকোপের সুতারখালী ইউনিয়নের ৪ জেলেকে গত কয়েকদিনের ব্যবধানে মুক্তিপনের দাবীতে জিম্মি করেছে বনদস্যুরা। জনপ্রতি বিশ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করেছে তারা।
সংশ্লিষ্ট ভুৃক্তভোগী পরিবার ও বনবিভাগ সুত্র জানায় গত ১২ দিনের ব্যবধানে সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের অধীন হাডডোরারমুখ ও বড় কচিখালী এলাকা থেকে বনদস্যু জাহাংগীর ও বড় ভাই (ওহিদ) বাহিনীর সদস্যরা জেলেদেরকে তুলে নিয়ে জিম্মি করেছে । জিম্মি জেলেদের মধ্যে নলিয়ান এলাকার আলী সানার পুত্র ইব্রাহিম সানা, আবুবক্কার গাজীর পুত্র বিল্লাল গাজী গত ১৩ দিন ধরে এই দুই বাহিনীর কাছে জিম্মি আছে। এদের পরিবারের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করা হয়েছে। অপারদিকে কালাবগী গ্রামের সুকেন রায়ের পুত্র শিশির রায় (২৮) ও আছাদুল সরদারের পুত্র সাইফুল সরদার (৩০) কে গত ১১ ডিসেম্বর তুলে নিয়ে জিম্মি করে বনদস্যু বাহিনী। জিম্মি থাকা জেলে পরিবারের সদস্যরা চরম দঃুশ্চিন্তার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। দস্যুদের দাবীকৃত টাকা জোগাড়ে নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী পরিবার গুলো স্থানীয় মহাজন ও এলাকাবাসীর দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। এনিয়ে গত ১ মাসে নলিয়ান রেঞ্জ এলাকা থেকে বনদস্যু বাহিনী শতাধীক জেলেকে জিম্মি করে কয়েক লাখ টাকা মুক্তিপন আদায় করেছে। সুন্দরবন থেকে ফিরে আসা জেলেরা জানায়, সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের নলিয়ান রেঞ্জ এলাকায় বর্তমানে ৭ টি দস্যু বাহিনী নিয়ন্ত্রন করছে। এরা হল জাহাংগীর বাহিনী, বড় ভাই (ওহিদ), রবিউল, জোনাব, ফারুক, সুমন ও মুন্না বাহিনী। এদের অবস্থান শিবসার পশ্চিম পার, পূর্বপার ও নিশানখালী-ভোমরখালী এলাকার বিভিন্ন খাল ও নদী এলাকায়। সুত্র জানায় দস্যুদের চাহিদা পুরনে ব্যর্থ হলে জেলেদের উপর নেমে আসে চরম অত্যাচার-নির্যাতন। এ কারনে অনেক জেলে পরিবার নিরুপায় হয়ে সুন্দরবন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। একদিকে চলছে দস্যুদের আতœসমর্পন অন্যদিকে নতুন সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন বাহিনী। অপরদিকে গত রবিবার সন্ধ্যায় হীরনপয়েন্ট এলাকায় বনদস্যু বড় ভাই বাহিনী ও জোনাব বাহিনীর মধ্যে আধিপাত্য বিস্তার নিয়ে ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়। এ সময় সেখানে থাকা দাকোপের ২ জেলে দস্যুদের ক্রস ফায়ারে গুলিবিদ্ধ হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট অনেকের মন্তব্য বনদস্যুদের সাথে উপকুলিয় গ্রামের অনেকের রয়েছে গোপন সখ্যতা। তারা বিভিন্ন সময় দস্যুদের খাবার গুলিসহ প্রয়োজনীয় মালামাল এবং সকল তথ্য সরবরাহ করে। এদের জন্য বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সুন্দরবন নির্ভরশীল পেশাজীবিদের। এ অবস্থায় আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক টহলের আহবান জানিয়েছেন সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবিরা।