মোংলায় খাল কাটাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা

প্রকাশঃ ২০১৮-১১-২৩ - ১৩:০৯

আবু হোসাইন সুমন, মোংলা : মোংলায় খাল কাটার নামে বসত বাড়ী-ভিটা উচ্ছেদ ও কয়েক’শ বিঘা ফসলি জমি নষ্টের অভিযোগ উঠেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খামখেয়ালীপনায় ফসলি জমি নষ্টসহ বাড়ী-ঘর বিলীনের আশংকায় পাঁচ গ্রামের মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। এ নিয়ে বড় ধরণের সংঘাতের আশংকা দেখা দিয়েছে। ব্যক্তিমালিকানা জমির উপর দিয়ে খাল খনন উদ্যোগের প্রতিবাদে স্থানীয়রা বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। বাড়ী-ঘর ও ধান-মাছের ফসলি জমি রক্ষার দাবীতে কয়েক’শ নারী, পুরুষ ও শিশু এ মানববন্ধনে অংশ নেন। এদিকে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি কেটে খাল খনন বন্ধে আদালতে পৃথক দুটি মামলাও করেছেন জমির মালিকেরা। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দাবী, ম্যাপে যেখানে খাল রয়েছে সেখান থেকেই কাটার প্রস্তুতি নেয়া নিয়েছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বাগেরহাট) মো: হুমায়ুন কবির বলেন, মোংলা ও রামপালের মোট ৮৩ টি খাল কাটার জন্য ৫৩১ কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়েছে। এরমধ্যে মোংলায় রয়েছে ১১টি খাল। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। মোংলা অংশের ১১টি খালের মধ্যে মাকড়ঢোন-১ খাল ৪ কিলোমিটার এবং মাকড়ঢোন-২ খাল ২ দশমিক ৬ মিটার কাটতে এরই মধ্যে স্থানীয় আমিন ও সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জরিপ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখানে আমাদের এককভাবে কোন কিছুই করার সুযোগ নেই।
মাকড়ঢোন এলাকার বাসিন্দা মো: সাইফুল্লাহ খান, শাজাহান ইজারদার, আঃ মালেক শেখ ও আউয়াল খানসহ একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, আমরাও খাল খননের পক্ষে, রেকর্ডিং খাল যেখান দিয়ে যেভাবে ছিল সেখান থেকেই কাটা হোক এটা আমাদের দাবী। তারা আরো বলেন, ১৯৩০ সালে গ্রামবাসীর উদ্যোগেই সকলের প্রয়োজনে নিজ নিজ জমির উপর দিয়ে খাল কাটা হয়েছিল। কালক্রমে ভরাট হয়ে বিলীন হয়ে যাওয়া সেই খাল এখন নতুন করে কাটার জন্য আমাদের অন্তত দুই থেকে আড়াই’শ বিঘা ধান-মাছের ফসলি জমির উপর সার্ভে করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এ জরিপ করে লাল ফ্লাগের নিশানা বসিয়ে এলাকায় আতংক ছড়িয়েছেন। তারা এসকল জমির ধান কেটে ও মাছ ধরে জায়গা খালি করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন। এতে করে এলাকার তিন’শ পরিবার উচ্ছেদ ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শংকায় রয়েছেন। খাল কাটা বন্ধ ও ফসলি জমি রক্ষায় তারা গত ১৯ নভেম্বর আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন।