যশোরে গণরোষে পুলিশ

প্রকাশঃ ২০১৮-০৪-০৩ - ২১:৪৩

যশোর: যশোর শহরের বেজপাড়া বিহারি কলোনি এলাকায় অসুস্থ এক যুবককে ‘মাদক ব্যবসায়ী’ আখ্যা দিয়ে মারপিট করায় জনতা ঘিরে ফেলেন ছয় পুলিশ সদস্যকে। গণপিটুনির হাত থেকে রেহাই পেতে কোতয়ালী থানার ওই পুলিশ সদস্যরা জনতার কাছে মাফ চান। সোমবার রাতে বেজপাড়া আজিমাবাদ কলোনি জামে মসজিদের পাশে ঘটনাটি ঘটে। বিক্ষুব্ধ লোকজন পরে বিক্ষোভ শুরু করলে থানার দুই কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে কমিউনিটি পুলিশ কমিটির নেতাদের মধ্যস্থতায় জনতাকে শান্ত করেন।
ওই এলাকার দেলোয়ারা সুলতানা দিলু নামে এক নারী জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এলাকার জনৈক আলমের ছেলে মাংস বিক্রেতা রওশন আলী নিজ বাড়ির সামনে বসে মোবাইলে গেম খেলছিলেন। এ সময়ে তিনটি মোটরসাইকেলে করে কোতয়ালী থানার ছয় পুলিশ সদস্য সাদা পোশাকে সেখানে যান। তারা মাদক ব্যবসায়ী বলে অভিযোগ তুলে রওশনকে আটক করেন। কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ তাকে মারপিটও করে। রওশন শারীরিকভাবে অসুস্থ। হৃৎপিন্ডের একটি ভাল্ব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রওশনের ওপেনহার্ট সার্জারি করা হয়। কিন্তু পুলিশ তার কাছে কোনো কিছু না শুনে পিঠে-বুকে আঘাত করতে থাকে। এ সময় রওশনের চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন জড়ো হন। রওশনের অবস্থা দেখে জড়ো হওয়া লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
দেলোয়ারা সুলতানা দিলু বলেন, ‘পিটুনিতে রওশন অসুস্থ হয়ে পড়লে এলাকার লোকজন পুলিশকে ঘিরে ফেলে পিটুনি দিতে উদ্যত হয়।’
এএসআই বিপ্লব হোসেনসহ ছয়জন নিজেদের ভুল স্বীকার করে জনতার কাছে ক্ষমা চান বলে দিলু ওই এলাকার কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির কর্মকর্তাদের সামনে সাংবাদিকদের জানান।
এদিকে, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ চলে যাওয়ার পর রওশনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ডাক্তাররা তকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। রাত আটটার দিকে এলাকার লোকজন স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির কার্যালয়ে জড়ো হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। সংবাদ পেয়ে কোতয়ালী থানার এসআই সুকুমার কুন্ডু ও এসআই হাসানুর রহমান ওই অফিসে যান এবং স্থানীয় পুলিশিং কমিটির নেতাদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বেজপাড়া গুলশান মোড় পুলিশিং কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু বলেন,‘পুলিশের সাথে রওশনের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পুলিশ ক্ষমা চেয়েছে। পরিস্থিতি এখন ভালো।’