যশোরে বৈদ্যুতিক পিলারে সাথে প্রাইভেটের ধাক্কায় তিন নারী নিহত

প্রকাশঃ ২০২০-০১-১৮ - ১৭:১০

যশোর প্রতিনিধি : যশোরে বিয়ের আলোকসজ্জা দেখে বাড়ি ফেরার সময় নববধূসহ একই পরিবারের তিন নারী নিহত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে শিশুসহ চার জন। পুলিশ গাড়ির চালককে আটক করেছে। নিহতরা হলো, যশোর শহরের ঢাকারোডের বিসিএমসি কলেজ এলাকার ইয়াসিন আলীর মেয়ে ও আদদ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী তনিমা ইয়াসমিন পিয়াসা (২৫) তার বোন তানজিলা ইয়াসমিন (২৮)। আহত হয়েছে পিয়াসার খালাত ভাই আরএন রোড এলাকার মঞ্জুর হোসেনের স্ত্রী আফরোজা তাবাসসুম তিথী (২৬), শহরের লোন অফিসপাড়ার এলাকার ব্যবসায়ী ও পিয়াসার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি (২৮), আফরোজা তাবাসসুম তিথীর মেয়ে মানিজুর (৩), জ্যেতির বন্ধু শাহিন হোসেন (২৩) ও হৃদয় (২৮)।
নিহতের চাচাত ভাই আব্দুল করিম জানান, গাড়ির চালক শফিকুল ইসলাম জ্যোতির সঙ্গে তনিমা ইয়াসমিন পিয়াসার (২৫) দেড় বছর আগে বিয়ে হয়। আগামী ২৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে পিয়াসাকে তাদের তুলে নেয়ার কথা। এ কারণে জ্যোতির বাড়িতে আলোকসজ্জা করা হয়। পিয়াসা রাতে ফোন করে জ্যোতিকে জানান, তারা আলোকসজ্জা দেখবেন এবং শহর ঘুরবেন। এ কারণে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে জ্যোতি তার নিজস্ব প্রাইভেটটি নিয়ে বের হন। গাড়িতে পিয়াসার বোন তানজিলা ইয়াসমিন ও পিয়াসার খালাত ভাবি আফরোজা তাবাসসুম তিথী, তার মেয়ে মানিজুর, জ্যেতির বন্ধু শাহিন হোসেন ও হৃদয় ছিলেন। তারা রাতে আলোকসজ্জা দেখে শহরে তাদের স্বজনদের দাওয়াত দিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের পালবাড়ি এলাকা থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। ফেরার পথে রাত সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে যশোর শহরের পুরাতন কসবা শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কের (আকিজের গলি) পাশে থাকা একটি বিল্ডিংয়ের প্রাচীর ও বিদ্যুতের খুঁটিতে সজোরে আঘাত করে গাড়িটি। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। গাড়িতে থাকা অন্যরা কমবেশি আহত হন। আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, একই পরিবারের তিনজন নিহতের ঘটনায় যশোর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জাগপার কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নিজামদ্দিন অমিতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ হাসপাতালে হাজির হন। এসময় তারা শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। এছাড়া যশোরের উৎসুখ জনতার ভিড় জমায় হাসপাতালে। এসময় কি ভাবে এবং কি কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। কেউ বলছেন, গাড়ির গতিবেগ ছিল কমপক্ষে ১৮০ কিলোমিটার। কেউ বলছেন, মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ার গাড়ির চালক শফিকুল ইসলাম জ্যোতির পরিচিত তামিম জানান, জ্যেতির গাড়ি চালায় খুব রাফ ভাবে। একই কথা বলছেন শহরের আর এন রোডের মোটরপার্টস ব্যবসায়ী কামাল। তিনি জ্যেতিকে অভিযুক্ত করেছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, শুক্রবার নিজেই গাড়ি চালিয়ে জ্যেতি যশোরে এসেছেন। তাতে যথেষ্ট ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তারপর রাতে ফের গাড়ি চালানোর সময় সে দুর্বল হয়ে পড়েছে। যার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতরা জানিয়েছেন, প্রাইভেটের গতিবেগ খুব বেশি ছিল। এসময় শফিকুল ইসলাম জ্যেতিকে স্লো করার অনুরোধ জানালেও সে শোনেনি।
যশোর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর শেখ তাসমীম আলম বলেন, ‘শুক্রবার রাত ১টার দিকে পুলিশ কন্ট্রোল রুম ও জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর থেকে আমরা জানতে পারি, শহরের শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কে একটি প্রাইভেটকার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। তথ্য পেয়েই পুলিশের রাত্রিকালীন দুটি টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এরপর সেখানে আমিও যাই। ওই প্রাইভেটকারে তিনজন পুরুষ, তিনজন নারী ও একটি শিশু ছিল। ঘটনাস্থল শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কের প্রাক্তন কাস্টমস কমিশনার জিএম কামালের বাড়ির প্রাচীর ও বিদ্যুতের খুঁটিতে সজোরে আঘাত করে প্রাইভেটকারটি। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) তৌহিদুল ইসলাম জানান, নিহত পিয়াসের স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতিকে আটক করা হয়েছে। মাদকাসক্ত ছিলেন কি না তা পরিক্ষার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং মাদকাসক্তের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হয়েছে।

যশোর শহরের ঢাকা রোড বিসিএমসি কলেজ এলাকার ইয়াসিন আলীর মেয়ে তানজিলা ইয়াসমিন (২৮), তনিমা ইয়াসমিন পিয়াসা (২৫) ও পিয়াসার খালাত ভাই আরএন রোড এলাকার মঞ্জুর হোসেনের স্ত্রী আফরোজা তাবাসসুম তিথী (২৬)। আহত হয়েছেন পিয়াসার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি (২৮), আফরোজা তাবাসসুম তিথীর মেয়ে মানিজুর (৩), শাহিন হোসেন (২৩) ও হৃদয় (২৮)।

ইয়াসিন আলীর ভাই, নিহত দুইবোনের চাচা আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, আগামী ২৩ জানুয়ারি তার ভাতিজি পিয়াসার বিবাহোত্তর সংবর্ধনার কথা ছিল।

পিয়াসার মামা শাহিনুর রহমান ঠান্ডু সাংবাদিকদের জানান, নিহতরা হলেন যশোর শহরের ঢাকা রোড বিসিএমসি কলেজ এলাকার ইয়াসিন আলীর মেয়ে তানজিলা ইয়াসমিন (২৮), তনিমা ইয়াসমিন পিয়াসা (২৫) ও পিয়াসার খালাত ভাই আরএন রোড এলাকার মঞ্জুর হোসেনের স্ত্রী আফরোজা তাবাসসুম তিথী (২৬)। আহত হয়েছেন পিয়াসার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি (২৮), আফরোজা তাবাসসুম তিথীর মেয়ে মানিজুর (৩), শাহিন হোসেন (২৩) ও হৃদয় (২৮)।

ইয়াসিন আলীর ভাই, নিহত দুইবোনের চাচা আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, আগামী ২৩ জানুয়ারি তার ভাতিজি পিয়াসার বিবাহোত্তর সংবর্ধনার কথা ছিল।
দুর্ঘটনাস্থল

পিয়াসার মামা শাহিনুর রহমান ঠান্ডু সাংবাদিকদের জানান, শহরের লোনঅফিসপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জ্যোতির সঙ্গে আদদ্বীন সখিনা মেডিক্যালের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী তনিমা ইয়াসমিন পিয়াসার দেড় বছর আগে বিয়ে হয়। আগামী ২৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে পিয়াসাকে তাদের তুলে নেওয়ার কথা। সে জন্য জ্যোতির বাড়িতে আলোকসজ্জা করা হয়। পিয়াসা রাতে ফোন করে জ্যোতিকে জানান, তারা আলোকসজ্জা দেখবেন এবং শহর ঘুরবেন। এ কারণে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে জ্যোতি তার নিজস্ব প্রাইভেটকার নিয়ে বের হন। গাড়িতে পিয়াসার বোন তানজিলা, খালাত ভাইয়ের স্ত্রী আফরোজা তাবাসসুম তিথী, তার মেয়ে মানিজুর এবং জ্যোতির দুই বন্ধু হৃদয় ও শাহিন ছিলেন। তারা রাতে আলোকসজ্জা দেখে শহরে তাদের স্বজনদের দাওয়াত দিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের পালবাড়ি এলাকা থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন।

ফেরার পথে রাত সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে যশোর শহরের পুরাতন কসবা শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কের (আকিজের গলি) পাশে থাকা একটি বিল্ডিংয়ের প্রাচীর ও বিদ্যুতের খাম্বায় সজোরে আঘাত করে প্রাইভেটকারটি। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। গাড়িতে থাকা অন্যরা কমবেশি আহত হন।
প্রাইভেটকারের আঘাতে ভেঙে যাওয়া খাম্বা

ঘটনার পরপরই পুলিশ ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। যশোর কোতোয়ালি থানার ইনসপেক্টর (তদন্ত) তাসমীম আলম জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের ব্রাদার (সিনিয়র নার্স) মোফাজ্জেল হোসেন জরুরি বিভাগের ডাক্তার কাজল মল্লিকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তিনজন মারা যান। আহত শিশুটি আশঙ্কামুক্ত।