যোগাযোগ-সুবিধা পেলে বিনিয়োগে আগ্রহী : ব্রিটিশ হাই কমিশনার

প্রকাশঃ ২০২০-১১-১৭ - ১৯:৫২

চট্টগ্রাম ব্যুরো:চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন পৃথিবীর অন্যতম প্রাকৃতিক বন্দর এর অবস্থান ও বহুমাত্রিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে চট্টগ্রাম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আন্ত:দেশীয় গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে ওঠার শতভাগ সম্ভাবনার আশাবাদ ব্যক্ত করে চট্টগ্রামে শিল্প-বাণিজ্য-পর্যটন খাতে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে চান।

তিনি আজ সকালে টাইগারপাসস্থ নগর ভবনে তাঁর অফিস  ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসনের সাথে সাক্ষাতকালে তাঁকে বলেন, চট্টগ্রাম ব্রিটিশ সু-সভ্যতার স্পর্শে ধন্য হয়ে যথেষ্ট আলোকিত। শিক্ষা, সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অনেক ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সভ্যতার ছাপ সুস্পষ্ট। রেলের পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরসহ অনেকগুলো ভিক্টোরিয়াল স্থাপত্য রীতি তারই সাক্ষাত বহন করে। একাধিক ব্রিটিশ কোম্পানী এখানে ব্যবসা-বাণিজ্যের ভিত্তি সোপান তৈরী করে দিয়েছে।

চা’য়ের বাগান ও এই শিল্পের বিকাশ ব্রিটিশদের হাত ধরেই অত্তন হয়েছে এবং চট্টগ্রামের বাগান থেকে উৎপাদিত চা বিশ্ব সেরা। এগুলো এখন বাঙালি মালিকানাধীন। সব মিলিয়ে ব্রিটিশের সাথে চট্টগ্রামের সুমধুর বন্ধনের স্মৃতি জ্বলজ্বল করে।
তিনি চট্টগ্রামের সাথে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যেও বন্ধনের কথা উল্লেখ করে বলেন, হাজার বছর ধরে চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক বন্দর সমুদ্র পথে প্রাচ্য, প্রতীচ্য ও পাশ্চাত্যের প্রবেশ দ্বার। তাই চট্টগ্রাম এতদঞ্চলের অর্থনৈতিক হৃদপিণ্ড। পৃথিবীর নানান প্রান্ত থেকে আসা বণিক ও পর্যটকরা এখানে এসে মুগ্ধ হয়েছেন, কেউ কেউ থেকেও গেছেন। তারা আমাদের সমাজ-সভ্যতা-অর্থনৈতিক ক্ষেএে উর্বর করে গেছেন।

ব্রিটিশদের অবদান এ ক্ষেত্রে আরো বেশি। তাঁরা দু’শ বছর এদেশ শাসন করেছে। তাই অনেক ক্ষেত্রে ব্রিটিশ আইন ও রীতি-নীতি এখনও বহাল আছে। চসিক প্রশাসক দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ায় চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক গুরুত্বের কথা তুলে ধরে বলেন, বে-টার্মিনাল ও মহেশখালীর মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর হয়ে গেলে চট্টগ্রাম আন্ত: দেশিয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে এবং এর ভবিষ্যত সিঙ্গাপুরের চেয়েও উজ্জ্বল।

কক্সবাজার থেকে মিরসরাই পর্যন্ত সরকারের পরিকল্পিত উপকূলীয় মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ হলে এ বিশাল বেল্টে শিল্প ও পর্যটনের বিশাল অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠবে। এ বিশাল সম্ভাবনার সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য প্রশাসক ব্রিটিশ হাইকমিশনারের প্রতি আহবান জানান। ব্রিটিশদেরই গড়ে তোলা ফয়’সলেক যথাযথ পরিচর্যায় হয়ে উঠতে পারে পর্যটকদের জন্য চমকপ্রদ চারণভূমি।

এখান থেকে ভাটিয়ারী পর্যন্ত ক্যাবল কার এর সংযোগ স্থাপন করে, একপাশে স্যাটেলাইট কটেজ নির্মাণ ও এংলিং (বড়শি দিয়ে মাছ ধরা) এর ব্যবস্থা করে হলে এটি উপমহাদেশের ভ্রমণ পিপাসুদের অন্যতম ভ্রমণ কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে। এছাড়া কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে ট্যানেলটি হয়ে গেলে নদীর দক্ষিন তীরে একাধিক শিল্পজোন গড়ে ওঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামের অর্থনেতিক অঞ্চলগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ আসা শুরু হয়েছে। চীন, কোরিয়া, জাপানসহ বিদেশি বিনিয়োগকারী সাড়া দিয়েছে। সবমিলিয়ে ১২টি দেশ থেকে এখানে বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে।