রংপুরেই দাফন হচ্ছে এরশাদের

প্রকাশঃ ২০১৯-০৭-১৬ - ১৭:৪৫

ঢাকা অফিস : নেতাকর্মীদের দাবির মুখে অবশেষে পল্লীবন্ধু এরশাদের দাফন করা হচ্ছে রংপুরের পল্লীনিবাসেই। আজ রংপুরে এরশাদের চতুর্থ ও সবশেষ জানাজা শেষে স্থানীয় নেতাকর্মীদের দাবির মুখে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এরশাদের দাফন রংপুরেই করার বিষয়ে তাঁর স্ত্রী রওশন এরশাদ সম্মতি দিয়েছেন বলে জাতীয় পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের ডেপুটি প্রেস সচিব খন্দকার দেলোয়ার জালালী জানান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতি রংপুরের মানুষের আবেগ, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতাবোধের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে রংপুরেই দাফন করতে অনুমতি দিয়েছেন রওশন এরশাদ। এরশাদ পত্নী আরও জানান, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতি রংপুরের গণমানুষের ভালোবাসা উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। তাদের আবেগ ও অনুরোধেই রংপুরে পল্লীবন্ধুকে সমাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এমনকি,  হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবরের পাশে বেগম রওশন এরশাদ তার কবরের জন্য জায়গা রাখতেও অনুরোধ জানিয়েছেন বলেও জানান খন্দকার দেলোয়ার জালালী।

এর আগে, রংপুর জেলা কালেক্টরেট কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাদ জোহর অনুষ্ঠিত তাঁর জানাজায় লাখো মানুষ অংশ নেয়। সেখানে জানাজা শুরুর আগে থেকেই এরশাদকে রংপুরে দাফনের দাবিতে বিশৃঙ্খলা শুরু করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। এমনকি, জানাজার পর অনেকক্ষণ মরদেহবাহী গাড়ীটি আটকে রাখা হয় মাঠেই। বহু চেষ্টার পর তার মরদেহ নেয়া হয় এরশাদের বাড়ি পল্লী নিবাসে। সেখানে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদের বৈঠকে রংপুরেই দাফনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

চতুর্থ দফায় জানাজার আগে, ঈদগাহ মাঠে নেয়ার পর এরশাদের মরদেহে শ্রদ্ধা জানান নেতাকর্মীরা। রাজধানীর পুরাতন বিমানবন্দর থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের মরদেহবাহী হেলিকপ্টার রংপুরে পৌছে দুপুর পোনে ১২টার দিকে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের দাফন যেকোনো মূল্যে রংপুরেই করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের (উত্তরাঞ্চল) নেতারা। এমনকি প্রিয় নেতার মরদেহ ঢাকায় আনা ঠেকাতে জাতীয় পার্টির উত্তরাঞ্চলের নেতারা জীবন দিতে প্রস্তুত বলেও জানান তারা। সোমবার দুপুরে, জাতীয় পার্টির রংপুর কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে নেতারা এ মন্তব্য করেন।

মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও রংপুরের সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদরে মরদেহ রংপুর থেকে নিয়ে যাওয়ার কোনো অপচেষ্টা করা হলে তা প্রতিহত করতে জাতীয় পার্টির লাখো নেতাকর্মী বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেবে, কিন্তু পল্লীবন্ধু এরশাদের মরদেহ রংপুর থেকে কোথাও যাবেনা।’

প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, রবিবার সকাল পোনে আটটায় ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ার হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ। তিনি রক্তে সংক্রমণ ও লিভার জটিলতাসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বয়স হয়েছিল ৮৯।