শাস্তির মুখে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের অন্তত দুইশো নেতা

প্রকাশঃ ২০১৯-০৭-১৪ - ১৪:১৮

ঢাকা অফিস : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরোধিতা করায়, শাস্তির মুখে ৬০ মন্ত্রী-সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের অন্তত দুইশো নেতা। এরইমধ্যে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। ভবিষ্যতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের শাস্তি হিসেবে এই সিদ্ধান্ত দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করবে বলে মনে করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত ৪৭৩ টি উপজেলার নির্বাচনে ১৪৯ টিতে চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের ১৪০ জনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী।

অনেক জায়গায় বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছিলেন আওয়ামী লীগের অনেক বড় নেতা, এমনকি মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা। এমনকি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে গিয়ে ঘরবাড়ি ছাড়া আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী।

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দলের শৃংঙ্খলা ভঙ্গের সাথে জড়িত এমন নেতাদের তালিকা দলীয় সভাপতির কাছে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতারা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘এখন অনেকেই আমাদের কাছে এসে বলছে যে তারা নির্বাচনে দাঁড়াতে চায়নি। তাদেরকে এমপি সাহেব দাঁড়াতে বলছে। সংসদ সদস্যের পছন্দ হবে না বলে সে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করবে, এটি দল কখনোই মেনে নিবে না। এর নেপথ্যে ৭০জন এমপি আছে বলে আমরা জেনেছি।’

এসব বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ওই বৈঠকে  দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সাংগঠনিক পদ স্থগিত করার পাশাপাশি কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করা দলের মন্ত্রী,সংসদ সদস্যদের বিষয়েও ব্যবস্থা নেয়ার।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা নির্বাচন করেছেন, তাদেরকে স্বপদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হবে। যেসব মন্ত্রী দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধেও কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না সেই মর্মেও আমরা শোকজ পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছি।’

মন্ত্রী, সংসদ সদস্যরা দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে সদুত্তর দিতে না পারলে, দলের পদ হারানোসহ ভবিষ্যতে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নই পাবেননা বলে জানান দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘এখন তাদের এমপি থেকে বাদ দেয়া সম্ভব না, যতক্ষণ না তারা স্ব ইচ্ছায় পদত্যাগ করে। সেক্ষেত্রে তাদেরকে একটি লাল সতর্ক বার্তা দেয়া হবে, যে তারা ভবিষ্যতে আর নৌকা মার্কার প্রার্থী হতে পারবে না।

ভবিষ্যতে নেতাকর্মীরা যাতে দলীয় শৃঙ্খলা ভাংগার সাহস না করেন, সেজন্যই আওয়ামী লীগ এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।