সংসদ নির্বাচনের পর এবার উত্তাপ ছড়াচ্ছে তালা উপজেলা পরিষদ’র সম্ভাব্য প্রার্থীরা

প্রকাশঃ ২০১৯-০১-০৮ - ১১:৩৬

সেলিম হায়দার, তালা  :  জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরই নির্বাচন কমিশনের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ঘোষণায় নড়েচড়ে বসেছে তালার সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে লবিংয়ের পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রার্থীরা শুরু করে দিয়েছেন গণসংযোগ। তাদের প্রচার-প্রচারণায় রীতিমত ফের গরম হতে শুরু করেছে তালার নির্বাচনী মাঠ।

শুরুতেই আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য ৪ জন প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও এখন পর্যন্ত বিএনপি বা জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের কোন প্রার্থীর নাম বিশেষভাবে প্রচার পাচ্ছেনা। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ঘোষ সনৎ কুমার বিজয়ী হন। ভাইস চেয়ারম্যান দু’টি পদে একই দলের যথাক্রমে (পুরুষ) মো: ইখতিয়ার হোসেন ও (মহিলা) জেবুন্নেছা খানম।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানায়, ইতোপূর্বে বিএনপি প্রায় সকল স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিলেও সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও নিজেদের অবস্থান থেকে এখন পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহনের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি। জামায়াত ইসলামীও এখন পর্যন্ত এনিয়ে কোন নীতিগত সিদ্ধান্তে পৌছেনি।

তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন নিয়ে বিএপি ও তার শরীক দলগুলো কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে না পারলেও সরকার দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে এনিয়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। তবে সংসদ নির্বাচনের মত উপজেলা নির্বাচনেও প্রাধান্য পাচ্ছে দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি। অনেক হেভিওয়েটদের মধ্যে উপজেলা নির্বাচনের বাসনা থাকলেও লবিং-গ্রপিংয়ের ঝামেলা এড়াতে পিছিয়ে যাচ্ছেন তারা।

৩৪৪.১৫ কি:মি:আয়তনের তালা উপজেলাটি সুন্দরবন উপকূলীয় জেলা সদর সাতক্ষীরা থেকে ২৫ কি:মি: দূরে অবস্থিত। ১২টি ইউনিয়ন ও ১ টি প্রশাসনিক থানা নিয়ে গঠিত তালা উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ২,৩৭,৩৬৫। তম্মধ্যে পুরুষ ভোটার ১,১৯,২৩৫ ও মহিলা ১,১৮,১৩০।

জাতীয় পার্টির শাষণামলে উপজেলা সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের পর ১৯৮৫ সালে প্রথম ও ১৯৯০ সালে ২য় নির্বাচনের পর বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে উপজেলা সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। এরপর ২০০৮ এর ৯ম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গিয়ে ফের উপজেলা সরকার পরিষদ ব্যবস্থা চালু করে। এরপর ২০০৯ সালের ৩য় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ঘোষ সনৎ কুমার বিজয়ী হন। এরপর ২০১৪ সালের চতুর্থ নির্বাচনে তিনি ফের একই দলের মনোনয়নে বিজয়ী হন। এবার ৫ম উপজেলা নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন চাইছেন ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তবে এবার নির্বাচনে একই দলের সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক ও তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক প্রনব ঘোষ বাবলু মনোনয়ন চাইছেন। ইতোধ্যে তিনি সাংবাদিক ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে মত বিনিময় করে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করে জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া একই দল থেকে চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তানা হলেন,জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র,জেলা কৃষক লীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান(পুরুষ)পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন,বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ইখতিয়ার হোসেন,ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি ও তালা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সরদার মশিয়ার রহমান,ইতোমধ্যে তিনিও সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করে প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। এছাড়া নাম শোনা যাচ্ছে,উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সাংবাদিক আ:জব্বার,জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর বিশ্বাস।

এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জেবুন্নেছা খানমের পাশাপাশি খেশরা ইউনিয়নের আ’লীগ নেত্রী,মুক্তি যুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চ’র মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা মুর্শিদা পারভিন পাঁপড়ি,জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক সাকিলা ইসলাম জুঁই।

যেহেতু দলীয় প্রতীকে এবারই প্রথম উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সে কারণে সংসদ নির্বাচনের ন্যায় দলীয় মনোনয়ন নির্বাচনী ময়দানে একই ধরণের উত্তাপ ছড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রার্থীরাও মনে করছেন এমনটি। সেক্ষেত্রে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সারি লম্বা হলেও দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করবেন বলেও জানাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।