সাঁথিয়ায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশঃ ২০১৮-০৪-০১ - ১৭:০৬

ফারুক হোসেন,সাঁথিয়া : পাবনার সাঁথিয়ায় কালবৈশাখি ঝড়ে ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে গাছপালা ঘরবাড়ীসহ উঠতি ফসলের। এলাকার বিভিন্ন সড়কগুলোতে গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে যোগাযোগ ব্যাবস্থা বিঘিœত হয়েছে। ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক খুটি উপড়ে পড়াসহ বিদ্যুতের তার ছিড়ে যাওয়ায় বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন ছিল সাঁথিয়া।
জানা গেছে বাংলাদেশের প্রায় ৭০ ভাগ পেঁয়াজের চাহিদা পূরনে সক্ষম পাবনার সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলায় গতবারের শিলাবৃষ্টির ক্ষতির ধকল শেষ হতে না হতেই আবারও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের রক্তঝরা শ্রমে-ঘামে ফলানো বিভিন্ন উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক কৃষক শিলা বৃষ্টি দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। লন্ডভন্ড ফসলের ক্ষেতে দঁড়িয়ে কৃষকের আক্ষেপ ছাড়া আর করার কিছুই নেই। কৃষক যে ফসলের বাম্পার ফলনের আশা করেছিলেন, সেই ফসল বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠবে কি না এবং মহাজনের ঋণ শোধ হবে কিনা এ চিন্তায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে না বিধায় কৃষক সঠিক মুল্য পাবে না। এতে খরচ ওঠা নিয়ে শংকায় এলাকার কৃষকেরা। সাঁথিয়া ভবানীপুরের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমার পেঁয়াজের কদম আর ২/৩ দিন পরেই ঘরে তুলবো। শুক্রবারের শিলাবৃষ্টিতে আমার সবশেষ হয়ে গেছে। অর্ধেক ও ঘরে তুলতে পারবো কিনা আল্লাহ জানে। আফড়া গ্রামের কৃষক উজ্জল,কালু জানান, গতবারে শিলা বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার কারণে একটি পেঁয়াজ ও বিক্রি করতে পারিনী । এবারও একই অবস্থা কিভাবে যে এ ঋণ শোধ করবো।
পাবনার সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলায় এবার শিলাবৃষ্টিতে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে।
সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে ও রাতে প্রচন্ড বৃষ্টির সাথে শিলাপাতে সাঁথিয়া উপজেলায় পেঁয়াজ, পেঁয়াজবীজ (কদম), রসুন, আলু, কাউন, শসা, বাদাম, সাজনা, গম, জব, মরিচ, পটল, বেগুন, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, বাঙ্গি, তরমুজ, করলা, লাউসহ বিভিন্ন উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ রঞ্জন কুমার প্রাং জানান, সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে সাঁথিয়া পৌরসভাসহ উপজেলার নন্দনপুর,ভুলবাড়িয়া,ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নে। শিলা বৃষ্টিতে ফলনের উপর প্রভাব পড়বে না তবে ফসলের সংরক্ষণ ক্ষমতা থাকবেনা বলেও তিনি জানান।