সিনহা খুনের গোড়ার রহস্য জানতে ঘটনাস্থলে মহড়া

প্রকাশঃ ২০২০-০৮-২২ - ০২:৪৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাবেক মেজর সিনহা খুনের গোড়ার রহস্য জানতে প্রদীপসহ ৩ আসামিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে হত্যার মহড়া (রেকি) করলেন র‌্যাবের তদন্তকারী দল। প্রধান আসামি বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে নিয়ে র‌্যাবের তদন্ত দল শুক্রবার (২১ আগস্ট) দুপুর একটার দিকে ঘটনাস্থল বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে পৌঁছায়।

এ সময় তদন্তের অংশ হিসেবে কীভাবে সিনহাকে হত্যা করা হয়েছিলো তার সঠিক দৃশ্যটি তুলে আনতে ঘটনার রেকি ( লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ, আক্রমণপূর্ব পর্যবেক্ষণ, আক্রমণের কলাকৌশল) শুরু করেন তারা। এজন্য একটি সাদা কারও ব্যবহার করা হয়। আসামিদের বর্ণনা অনুযায়ী রেকি পরিচালনা করা হয়। বেলা ৩টার দিকে রেকি সম্পন্ন হয়।

রেকিতে ওই ঘটনার সাথে মিল রেখে প্রথমে এসআই্ নন্দ দুলালকে গাড়ি থেকে তার ভূমিকার চিত্র ধারণ, এরপর লিয়াকত আলী ও সর্বশেষ সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের রেকি নেয়া হয়। এ সময় তাদেরকে বিভিন্ন প্রশ্নও করা হয়।
এমন কী ঘটনা ঘটেছিল সেদিন যে সিনহাকে এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে গুলি করা হয়েছিলো?— এমন সব প্রশ্নের উত্তর জানতে প্রধান তিন আসামিকে ঘটনাস্থলে নেওয়ার পর তদন্ত দল প্রথমে ঘটনাস্থল এবং আশপাশ ঘুরে দেখেন।

দুপুর ২টা পর্যন্ত র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তাফা সরওয়ার, র‌্যাবের আইন ও মিডিয়া উইং প্রধান লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ এবং সিনহা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক সিনিয়র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম ঘটনাস্থল ও আশপাশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সাথেও কথা বলেন র‌্যাবের কর্মকর্তারা। রেকি পরিচালনা করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। রেকি শেষ করেই র‌্যাব ঘটনাস্থলে থেকে চলে যায়।

বরখাস্ত হওয়া টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বরখাস্ত হওয়া ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ও বরখাস্ত হওয়া এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে আদালতের নির্দেশ মতে গত ১৮ আগস্ট কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে রিমান্ডের জন্য হেফাজতে নেয় র‌্যাব। আজকের করা রেকিও রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদের অংশ বলে জানিয়েছে র‌্যাব সূত্র।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই খুন হওয়া মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান টেকনাফের বাহারছড়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এরপর ৫ আগস্ট তার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদি হয়ে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলী, নন্দলাল রক্ষিত, সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়া সহ ৯জনকে আসামি করে টেকনাফ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। পরে মামলা টেকনাফ থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয়। এ মামলায় এজাহারভুক্ত নয় এমন আসামির মধ্যে সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এছাড়াও পরে বাহারছড়ার স্থানীয় তিনজন ও এপিবিএনের তিন সদস্যকে আসামি তালিকায় এনে গ্রেপ্তার করা হয়।