সুন্দরবনের জেলে ও বনরক্ষীরা জড়িয়ে পড়েছে পরস্পর বিরোধী মামলায়

প্রকাশঃ ২০২০-০৫-১৪ - ১৫:৫৭

বাগেরহাট প্রতিনিধি: সুন্দরবনের জেলে ও বনরক্ষীরা পরস্পর বিরোধী দুটি মামলায় জড়িয়ে পড়েছে। বনবিভাগের দাবী-জেলে নামের অপরাধীররা নিজেদের অপরাধ লুকাতে মামলার আশ্রয় নিয়েছে। আর জেলোরা বলছেন বৈধ ভাবে বনে মাছ শিকার গিয়ে অনৈতিক চাহিলা পূরনে ব্যর্থ হলে তাদের মারধর সহ হয়রানী করে বনরক্ষীরা। পরস্পর বিরোধী এ নিয়ে বনবিভাগ ও জেলেদের মধ্যে নানা আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
মোংলার মিঠাখালী গ্রামের শেখ সোহরাব হোসেন গত ১ মে শরনখোলা থানায় ৪ বনরক্ষীর বিরুদ্ধে দায়ের করা লিখিত মামলায় বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি দুই নৌকায় চার জেলে বৈধ ভাবে চরাপুটিয়ার বিজবিজিয়ার খালে মাছ ধরতে যায় মোংলার বাঁশতলা গ্রামের মোঃ হানিফ মোছাল্লী, মোঃ হামিদ মোছাল্লী, আসাদ মোছাল্লী ও আতিয়ার মোছাল্লী নামের ৪ জেলে। এ সময় বনরক্ষীরা জেলেদের কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। তৎক্ষনিক ঘুষের টাকা না পেয়ে জেলেদের বেদড়ক মারধর সহ তাদের নৌকা দুটি নদীতে ডুবিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে জেলে হানিফ মোছাল্লীর কাছে থাকা ৫ হাজার টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করে বনরক্ষীরা। মামলার বাদীর অভিযোগ-জেলে আসাদকে লাঠি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত ও মারাত্মক জখম করা হয় এবং বনরক্ষী মোঃ মোতালেব হোসেন জেলে হামিদ মোছাল্লীকে খুন করার উদ্দ্যেশ্যে রামদা দিয়ে পিঠে জখম করে। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শরনখোলা থানার এস আই স্বপন কুমার সরকার বলেন, মামলায় সুন্দরবনের ধানসাগর ষ্টেশনের ফরেস্টার মোঃ মিজানুর রহমান (৪৫), তাম্বুলবুনিয়া টহল ফাঁড়ির আবুল বাশার (৩৮) এবং মোঃ মোতালেব হোসেন (৪০)কে আসামী করা হয়েছে।
বন কর্মকর্তাদের নামে মামলার বিষয়ে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেন বলেন, গত ১৩ জানুয়ারী সুন্দরবনের চরাপুটিয়ার বিজবিজিয়ার খালে জেলেদের দুটি নৌকা চ্যালেঞ্জ করে বনরক্ষীরা। এ সময় জেলেদের নৌকা থামাতে বলা হলে তারা দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং বনরক্ষীদের হামলা চালায়। এক পর্যায় জেলেরা নামের অপরাধীরা পালিয়ে গেলে তাদের নৌকায় তল্লাশী চালিয়ে জাল ও হরিণ শিকারের ফাঁদ এবং বরফ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে গত ১৭ জানুয়ারি শরনখোলা থানায় বন আইনে মামলা দায়ের করে বনরক্ষীরা। ওই বন বনকর্মকর্তা বলেন, বন বিভাগের সাথে আপোষ-সমঝোতায় ব্যর্থ হয়ে কৌশল হিসেবে তারা নাটক সাজিয়ে পাল্টা মামলাসহ নানা চক্রান্তে লিপ্ত হয় অপরাধীরা।