২৪ ঘণ্টার মধ্যে মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ হাই কোর্টের

প্রকাশঃ ২০১৮-১২-০৬ - ১৮:০৮

ঢাকা অফিস : নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকা বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকতার কাছে পাঠিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা যাচাই-বাছাইয়ের যে নির্দেশ হাই কোর্ট দিয়েছিল, তা আপিল বিভাগও বহাল রেখেছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা বাতিলের বিরুদ্ধে কোনো পক্ষ আপিল করলে, সে আপিলও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ইসিকে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়। ঢাকা -৯ আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসের পক্ষ আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান। অন্যদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার পক্ষ শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আদেশের পর জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, হাই কোর্টে যে আদেশ দিয়েছিল সেটি মোডিফাই করে আপিল বিভাগ আদেশ দিয়েছেন। আদেশে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মির্জা আব্বাস সাহেবের ঢাকা-৯ আসনের মনোনয়ন পত্রটির যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করতে হবে। অর্থাৎ, মনোনয়নপত্রটি গ্রহণ করা হল, নাকি বাতিল করা হল, সে সিদ্ধান্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো প¶ যদি আপিল করে, সে আপিলও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে। এর অর্থ হল, মির্জা আব্বাস সাহেবের মনোনয়নপত্র গৃহীত না হলে তিনি আপিল করার সুযোগ পাবেন। এর আগে হাই কোর্টের আদেশের পর আইনজীবী এহসানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, গত ২৮ নভেম্বর ‘চেষ্টা করেও’ মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। নির্ধারিত সময়ের পরে দাখিলের অজুহাতে সেদিন মনোনয়নপত্র জমা নেয়নি। পরে ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্রটি সরাসরি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্রটি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে না পাঠিয়ে রেখে দেয়। এ কারণে হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হয়। মির্জা আব্বাসের ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত মঙ্গলবার হাই কোর্ট আদেশে বলেছিল, নির্বাচন কমিশনে থাকা এই বিএনপি নেতার মনোনয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকতার কাছে পাঠানোর পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করতে হবে। সেই সঙ্গে মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্র ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে’ গ্রহণ না করা এবং পরে নির্বাচন কমিশন থেকে তা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে না পাঠানোর বিষয়টি কেন ‘আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট।
আরও তিন জনের মনোনয়নপত্র যাচাইয়ের নির্দেশ: কিশোরগঞ্জ-১ ও ২ আসনে গণফোরাম মনোনীত প্রার্থী এম ডি আজহারুল ইসলাম ও এম শফিউর রহমান খান বাচ্চুর মনোনয়নপত্র জমা নিয়ে তা যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া ঢাকা-১৬ আসনের ¯^তন্ত্র প্রার্থী সাদাকাত খান ফাক্কুরও মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ১২ ঘণ্টার মধ্যে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। পৃথক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ঊৃহস্পতিবার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে গণফোরামের দুই প্রার্থীর প¶ে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোতাহার হোসেন, সঙ্গে ছিলেন রাজি উদ্দিন সরোয়ার। ¯^তন্ত্র প্রার্থী সাদাকাত খান ফাক্কুর প¶ে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিক। প্রার্থীদের অভিযোগ, গত ২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা নেননি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আবেদনে সাড়া না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত উপর্যুক্ত আদেশ দিয়েছেন।