ইউনিক ডেস্ক : প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সঙ্গীত ও অসাধারণ গায়কী ঢঙের জন্য তিনি চারণকবি ও ‘সরকার’ উপাধি লাভ করেন। তিনি প্রায় এক হাজার ৮০০ গান রচনা করেছেন।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ একদিন ভাবি নাই মনে’, ‘তুমি জানো নারে প্রিয়/ তুমি মোর জীবনের সাধনা’, ‘এই পৃথিবী যেমন আছে/ তেমনি ঠিক রবে/ সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে/ একদিন চলে যেতে হবে’ – এ ধরনের অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা ছিলেন তিনি।
আজ চারণ কবি বিজয় সরকারের ৩২তম প্রয়াণ দিবস। ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ার তার মৃত্যুর হয়।
তিনি অনেক ইসলামী গান ও কবিতা রচনা করেন। কবিগানের আসরেও দুর্দান্ত ছিলেন তিনি।মাতিয়ে তুলতেন দর্শক-শ্রোতাদের। কোন কোন মঞ্চে তৎক্ষনাৎ নিজের রচিত আধ্যাত্মিক গান পরিবেশন করে তিনি উপস্থিত শ্রোতাদের মুগ্ধ করতেন। অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৩ সালে একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত হন উপমহাদেশের প্রখ্যাত এ চারণ কবি।
১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের ডুমদি গ্রামে তার জন্ম। বাবার নাম নবকৃষ্ণ অধিকারী এবং মার নাম হিমালয়া দেবী। তার প্রথম স্ত্রী বীণাপাণি দেবীর মৃত্যুর পর প্রমদা দেবীকে বিয়ে করেন তিনি। দু’ছেলে কাজল অধিকারী ও বাদল অধিকারী এবং মেয়ে বুলবুলি ভারতে বসবাস করেন। তার শৈশবকাল এবং জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে প্রিয় জন্মভূমি ডুমদিসহ নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায়।
ছেলেবেলা থেকেই তিনি কবিতা, গান রচনা ও সূরের মধ্যে ডুবে থাকতেন। তাই প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ায় তিনি আর বেশিদূর এগুতে পারেননি।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুরস্রষ্টা, গীতিকার ও গায়ক, চারণকবি বিজয় সরকার স্মরণে নড়াইলে আজ থেকে দুদিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়েছে। জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী।
বিজয় সরকার ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এসব কর্মসূচি পালন হচ্ছে বলে জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কামরুল আরিফ।
দু’দিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে চিত্র প্রদর্শনী, বিজয়গীতি পরিবেশন, বিজয় সরকার পদক প্রদান, বিজয় সরকারের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে ভারতসহ দেশ-বিদেশের বরেণ্য কবি, সাহিত্যিক, গবেষক ও লোকজ সংস্কৃতির পুরোধাগণ অংশগ্রহণ করছেন।