ঢাকা অফিস : ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপকূলীয় এলাকায়। আম্পানের আঘাতে দেশের সাত জেলায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা, বরগুনা, ভোলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে অনেক গ্রাম। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অন্তত ৮টি জেলা। বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক ফসল হানির পাশাপাশি রাজশাহীতে ঝরে গেছে ২০ শতাংশ আম।
ঘূর্ণিঝড়ে যশোরে পাঁচজন, ভোলায় তিনজন, সাতক্ষীরায় তিনজন, পটুয়াখালীতে দুইজন, পিরোজপুরে একজন, ঝিনাইদহে একজন ও চট্টগ্রামে সন্দ্বীপের একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় পুরো সাতক্ষীরা জেলা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে। আশাশুনি, শ্যামনগর এবং কালীগঞ্জে বেড়িবাঁধের ২৩টি স্থান ভেঙে যাওয়ায় অসংখ্য মাছের ঘের ভেসে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি গাবুরা ইউনিয়ন, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনিতে। উপড়ে গেছে গাছপালা, বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ও পোল্ট্রিফার্ম। মোবাইল টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক স্থানে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
খুলনার উপকুলীয় এলাকা কয়রায় বেড়িবাঁধের ৫টি স্থান ভেঙে অন্তত ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দাকোপ ও কয়রা উপজেলা । এছাড়া, বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বরগুনা সদরের আয়লা বেড়িবাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাথরঘাটার জিমতলা এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কুমিরমারায় ভেসে গেছে ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের। লবণগোলা, বুড়িরচর, কালিবাড়ি এলাকায় স্লুইচগেট নির্মাণের জন্য তৈরি বাঁধ ধসে গেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় বরিশালের বিভিন্ন স্থানে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ফসলের। জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে ।
ভোলার ঢালচর, কুকরিমুকরি, চর পাতিলা, চর নিজামসহ বেশ কয়েকটি চরের নির্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে কাঁচা ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর, চাচরা ও লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নে তিনটি পয়েন্টের বেরিবাধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে ভোলা-৩ আসনের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন স্থানীয়দের নিয়ে বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ শুরু করেন।
আম্পানের আঘাতে যশোরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, উপড়ে গেছে গাছপালা, বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। আহত হয়েছে অর্ধশত মানুষ। এদিকে ঝড়ের আগে কৃষক ধান ঘরে তুলতে পারলেও সবজি, আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমের। বাগানগুলোর প্রায় ২০ শতাংশ আম ঝরে গেছে। চারঘাট, পুঠিয়া ও বাগমারার উপর দিয়ে ব্যাপক তান্ডব চালায় আম্পান। বেশকিছু এলাকায় গাছপালা ভেঙে পড়েছে।
চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড়ের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, তবে পানি বেড়ে যাওয়ায় আনোয়ারায় বেড়িবাঁধ উপচে কয়েকটি ইউনিয়ন তলিয়ে গেছে।