মোঃরফিকুল ইসলাম মিঠু: সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে যতই দূরণীর্তি মুক্ত করতে চাইছেন কোন ভাবেই তা সম্ভব হচ্ছেনা।রাজধানীর প্রান কেন্দ্র উত্তরায় মাইলষ্টোনের শিক্ষকদের রমরমা কেচিং বাণিজ্যে অতিষ্ট অভিভাবকরা।কতৃপক্ষ উদাসহীন ।এব্যাপারে মাইলষ্টোনের এডমিন অফিসার মাসুদ সাহেবের সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া জায়নি।এরই মধ্যে সরকার রাজধানীর চারটি স্কুল ও কলেজের কোচিংয়ে যুক্ত ৭২ জন শিক্ষকের এমপিও বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এর অংশ হিসাবে এসব শিক্ষকদের কাছে রবিবার কারণ দর্শাণোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব পাঠাতে হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে এমপিও বাতিল করা হবে।
কোচিংয়ে যুক্ত ৭২ জন শিক্ষকের মধ্যে রয়েছে আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ৩৬ জন, মতিঝিল স্কুল এন্ড কলেজের ২৪ জন, ভিকারুন নিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজের ৭ জন এবং রাজউক উত্তরা স্কুল এন্ড কলেজের ৫ জন শিক্ষক।
এরা সকলেই কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা তোয়াক্কা না করে কোচিং বাণিজ্য পরিচালনা করে। এ অনিয়মের মাধ্যমে তারা বাড়ি গাড়ি অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে যান। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে মনোযোগী না হয়ে অর্থ লোভে শিক্ষার্থীদের কৌশলে নিজের কোচিংয়ে আনতে বাধ্য করতো।
কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালার অনুযায়ী, কোচিং বাণিজ্য যুক্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষদের এমপিও স্থগিত, বাতিল, বেতন ভাতা স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন এক ধাপ অবনমিতকরণ, সাময়িক বরখাস্ত, চূড়ান্ত বরখাস্ত ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে। এমপিওবিহীন শিক্ষকের প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত বেতন ভাতা স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন এক ধাপ অবনমিতকরণ, সাময়িক বরখাস্ত, চূড়ান্ত বরখাস্ত ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে। এছাড়া কোচিং বাণিজ্যে যুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিলে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়াসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পাঠদান অনুমতি, স্বীকৃতি, অধিভুক্তি বাতিল করা যাবে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান টিম অনুসন্ধান করে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকা মহানগরের স্বনামধন্য আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি পাঠায়। স্কুলগুলোর মধ্যে বেসরকারি চারটি ও সরকারি চারটি স্কুল রয়েছে। এই প্রথমবারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজধানীর অন্যান্য স্কুলের কোচিং বাণিজ্যে যুক্ত শিক্ষকদের তালিকা তৈরি করে সে অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছের অভিভাবকরা।
এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সুপারিশের ভিত্তিতে গত ৩০ জানুয়ারি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় থাকা এবং কোচিং বাণিজ্য চালানো বিভিন্ন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৫ জন শিক্ষককে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাঁদের পুরনো কর্মস্থল ছাড়তে বলা হয়।
এর আগে গত নভেম্বরে রাজধানীর ২৪ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫২২ জন শিক্ষককেও বদলির সুপারিশ করেছিল দুদক। সে সময় কমিশনের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ওই শিক্ষকরা ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৩৩ বছর পর্যন্ত এক বিদ্যালয়ে রয়েছেন। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতার পাশাপাশি কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছেন। তাঁরা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অর্থ উপার্জন করছেন।