করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ শত শত জেলে পরিবারে মানবিক বিপর্যয়

প্রকাশঃ ২০২০-০৪-১৬ - ১২:০৩

কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধিঃ সম্প্রতি সুন্দরবনে চর পাটা ও ঝাঁকি জাল দিয়ে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার রোধ এবং মাছের নিরাপদ প্রজনন ও সংরক্ষণ করতেই এই নিষেধাজ্ঞা। পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মোঃ আবু সালেহ এই তথ্য জানিয়েছেন। তবে সুন্দরবন খুলনা সার্কেলের (সিএফ) মোঃ মইনুদ্দীন খাঁনের নির্দেশে পারমিট বন্ধ করা হয়েছে বলে নিশ্চিৎ করেছে বন বিভাগ। করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ জেলে বাওয়ালীরা নিরাপদে সুন্দরবনে মাছ ধরতে পারলেও সেটি বন্ধ থাকায় তারা পড়েছে মানবিক বিপর্যয়ে। অবিলম্বে পারমিট চালু করার দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
তবে নিষেধাজ্ঞার জানার পর থেকে জেলেদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা আশায় বুক বেধে বসে আছে যে কোন মুহুর্তে পারমিট চালু হবে। মৎস্য ব্যবসায়ী জামাল মোড়ল বলেন,মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করে পারমিট জরুরী ভিত্তিতে চালু করা প্রয়োজন। সুন্দরবনের খুব কাছের জনপদ কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের পাথরখালী গ্রামের জেলে কামরুল ইসলাম (৩০) বলেন, ‘সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ ধরে খারাপ লোকেরা, আমরা বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে মাছ ধরি পেটের দায়ে। এটা করেই আমাদের সংসার চলে, এটাই আমাদের পেট মজুরি। শুনছি আর মাছ ধরতে পারব না, এখন তো জীবনে মারা যাবো।
সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে মাছ ধরে পরিবারের জীবিকা চালান এমন আরও অনেকেরে সঙ্গে কথা হলে তারা সকলেই বললেন, ‘ফরেস্টে অফিস থেকে পাশ পারমিট নিয়ে ১২ মাসই নদীতে মাছ ধরি। বর্তমানে দুই গোন মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। আগামীতে আরও বেশ কিছু দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকলে কী করে খাবো, কীভাবে সংসার চলবে। এর উপর নিভৃর করে সুন্দরবনে হাজার হাজার জেলে পরিবার জীবিকা নির্ভর করে। পাশ পারমিট বন্ধ থাকায় তারা মনবেতর জীবন যাপন করছে। এ সময় তারা সরকারের কাছে পাশপারমিট চালু রাখার দাবি জানান। কয়রা উপজেলার সুন্দরবনের মৎস্য ব্যবসায়ী আবু সাঈদ মোল্যা বলেন,সম্প্রতি বন বিভাগ থেকে পাটা ও ঝাকি জালের পারমিট বন্ধ করা হয়েছে। যে কারনে বন্ধ করা হয়েছে সেটি অবাস্তব। পাটা ও ঝাকি জাল দিয়ে মাছ ধরার সময় কোন জেলে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরেনা। মুলত পাটা জাল দিয়ে সাদা মাছ ধরা হয়। আর সাদা মাছ মারতে বিষ প্রয়োগের প্রশ্নই উঠেনা। বন বিভাগের নিয়ম মেনেই জেলেরা পাটা ও ঝাকি জাল দিয়ে মাছ ধরে থাকে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের (ডিএফও) মোঃ বশিরুল-আল মামুন বলেন, পাটা ও ঝাকি জালের পারমিট চালুর বিষয়টি বিবেচনা রয়েছে।