গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে আবাদি জমি নষ্ট করে গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়ায় হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়েছে পরাণপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এ সব জমি যাতে নষ্ট করা না হয় এবং জমির মালিকরা যাতে নিজ জমি ফিরে পায় এবং চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে এমনটাই দাবি করেছেন কৃষি নির্ভর পরাণপুর এলাকাবাসী।
সম্প্রতি সরেজমিন গেলে সাংবাদিকদের সামনে জড়ো হন সেখানকার পঞ্চাশোর্ধ বহু মানুষ। সবার একই কথা, বিগত ১’শ বছর ধরে মধুমতি নদী বিভিন্ন সময়ে গতিপথ পরিবর্তণ করে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে সরে এসেছে। এর ফলে পরাণপুর ৯৩নং মৌজার বারোআনি জমি বিভিন্ন সময়ে একদিকে যেমন তলিয়েও গেছে, আবার অন্যদিকে চরও জেগে উঠেছে। বহু জমি চলে গেছে নদীর ওপারে নড়াইল জেলা সীমান্তে। জেগে ওঠা চরের এ সব জমির সিএস, আরএস এবং এসএ রেকর্ডীয় মালিকানার কাগজপত্র রয়েছে। সে অনুযায়ী বংশ পরাম্পরায় তারাই এসব জমি চাষাবাদ ও ভোগ করে আসছিলেন। কিন্তু বিআরএস রেকর্ডের সময় জমির মালিকদের কিছু না জানিয়ে তৎকালীন সার্ভেয়ার সরেজমিনে না গিয়ে ঘরে বসে এ সব জমি খাস খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত করেন বলে তারা অভিযোগ করেন। বছর তিনেক আগে বিষয়টি জানতে পেরে তারা জমি ফিরে পেতে আদালতের দারস্থ হন এবং জেলা জজ কোর্টে দু’টি মামলা দায়ের করেন।
সম্প্রতি একটি মামলায় ৯৩শতাংশ জমির রায়ও বাসিন্দাদের পক্ষে আসে। এরই মধ্যে সেখানে গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণ পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে এবং একটি বিশাল জায়গা জুড়ে চাষাবাদ বন্ধ করে দিয়ে লাল পতাকা টাঙ্গানো হয়েছে। তাই নদী সিখস্তির দোহাই দিয়ে সরকার যেন তাদের জমিগুলো খাস খতিয়ানে না নিয়ে যান এবং এ সব আবাদী জমিগুলো নষ্ট করে যেন এলাকাবাসীর জীবিকা নির্বাহের পথ বন্ধ না করেন, সে জন্য তারা সরকারের সুদৃষ্টির প্রার্থনা জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম মাঈনুদ্দিন বলেন, বিআরএস রেকর্ডের সময় মুধমতি নদীর জেগে ওঠা চরে পরাণপুর ৯৩নং মৌজার প্রায় ১০ একর জমি খাস খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। সে সময় কেউ কোন জমির মালিকানা দাবী করেনি। এর আগে নদী সিখস্তির কারণে তলিয়ে যাওয়া জমির অবলোপনের জন্যও কেউ আবেদন করেনি। তাছাড়া গোপালগঞ্জে বহু হত-দরিদ্র ও গৃহহীন পরিবার রয়েছে। সে কারণে পরাণপুর মৌজায় সরকারি জমিতে গুচ্ছ গ্রাম তৈরীর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে শুরুতেই অন্ত:ত ৪০টি গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসণের ব্যবস্থা হবে।