ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি: গ্রেপ্তার হতে পারেন বেশ কয়েকজন নেতা

প্রকাশঃ ২০১৯-০৯-২৪ - ১৭:৩২
ঢাকা অফিস : যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূইয়া এবং জি কে শামীমকে গ্রেপ্তারের পর, একই ধরণের অপরাধের সঙ্গে জড়িত সংগঠনটির আরো অনেক নেতার নামই বেরিয়ে আসছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকা এসব নেতা গ্রেপ্তার হতে পারেন যে কোনো সময়।

সম্প্রতি গণভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের পর তাদের গ্রেপ্তারে তৎপর হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বুধবার প্রথম গ্রেপ্তার হন ফকিরেরপুল ইয়াং ম্যানস ক্লাবের ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রক যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূইয়া। এরপর গ্রেপ্তার হন যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে আসা জি কে শামীম।

চলমান অভিযানে এখন একের পর এক বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত একাধিক যুবলীগ নেতার নাম। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ রয়েছে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সভাপতি সম্রাটের বিরুদ্ধে। শুধু ক্যাসিনো নয়, টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে ফুটপাতের চাঁদাবাজির টাকা উঠতো তার নামে।

যুবলীগ নেতা এনামুল হক আরমান বিএনপি আমলে ছিলেন হাওয়া ভবন ঘনিষ্ঠ। সম্রাটের হাত ধরে যুবলীগে ভিড়ে ক্যাসিনোর টাকা সংগ্রহ করতেন আরমান। বিদেশ থেকে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম আরমানের মাধ্যমেই প্রথম দেশে আসে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ফ্রিডম পার্টির ক্যাডার হিসেবে রাজনীতিতে আসলেও সম্রাটের হাত ধরে যুবলীগ নেতা হয়ে যান সোহরাব হোসেন স্বপন। সম্রাটের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত স্বপন পরিচিত ক্লাবপাড়ার ডন হিসেবে। ক্যাসিনোগুলোর অন্যতম নিয়ন্ত্রক ছিলেন স্বপন।

একসময় জাতীয় পার্টি করা সরোয়ার হোসেন মনাকে যুবলীগের নেতা বানান সম্রাট। সম্রাটের হয়ে ফকিরাপুল-আরামবাগের ক্যাসিনো দেখাশোনা করতেন মনা।

মতিঝিল এলাকার কাউন্সিলর মোমিনুল হক সাঈদ একসময় পরিচিত ছিল বিএনপি ঘরানার ক্যাডার হিসেবে। যুবলীগে যোগ দিয়ে বনে যান দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মতিঝিল এলাকার কয়েকটি ক্যাসিনো চালানোর পাশাপাশি ফুটপাতে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে সাঈদের বিরুদ্ধে।

অবৈধভাবে সদরঘাট এলাকার দোকান দখল, টেন্ডারবাজি এবং অতিরিক্ত মূল্যে হাসপাতালে খাবার নিতে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে যুবলীগ নেতা বাবুর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে কয়েক বছরেই শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বাবু।

শিক্ষা ভবনের ডন হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম। শুধু শিক্ষাভবনে একচ্ছত্র টেন্ডারবাজি এবং ঠিকাদারির কাজ বাগিয়ে শত শত কোটি টাকার মালিক শফিকুল ইসলাম।

কাজী আনিস ছিলেন যুবলীগ অফিসের কম্পিউটার অপারেটর। এখন হয়ে গেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক। যুবলীগ চেয়ারম্যানের কাছের মানুষ আনিস গেল এক দশকেই টাকার পাহাড় গড়েছেন। ক্যাসিনো, চাদাবাজি, টেন্ডারবাজির টাকা ভাগ বাটোয়ারার অভিযোগ আনিসের নামে।  যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিটে পছন্দের লোক ঢুকিয়ে বহু টাকা কামিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এই আটজন ছাড়াও যুবলীগের আরো বেশ কয়েকজন নেতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছেন। এদের মধ্যে বিদেশেও গা ঢাকা দিয়েছেন দুয়েকজন।  অভিযোগের মুখে থাকা নেতারা যেকোন সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে জানা গেছে।