গাইবান্ধা প্রতিনিধি : বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণ ও উজানের নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধা জেলা জুড়ে পুনরায় চতুর্থ দফায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, করতোয়া ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি এখন বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হয়েছে এবং নতুন নতুন এলাকা প¬াবিত হয়েছে।
এদিকে করতোয়া নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি, তালুককানুপুর ও হরিরামপুর ইউনিয়ন এবং পৌরসভার বেশকিছু এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে এবং পলাশবাড়ি উপজেলার কিশোরগাড়ি ও হোসেনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি ঢুকতে শুরু হওয়ায় বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এছাড়া গাইবান্ধা পৌর এলাকার কিছু কিছু এলাকাসহ সদর উপজেলার খোলাহাটি, কুপতলা, ঘাগোয়া, গিদারি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলোর বসতবাড়ি ও রাস্তা ঘাট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ায় এলাকার লোকজন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এদিকে দীর্ঘ মেয়াদী বন্যায় জেলার ১০টি ইউনিয়নের ৬৫টি চরাঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে দীর্ঘদিন যাবত আশ্রয় নিয়ে পয়ঃনিস্কাশন সমস্যা, জ্বালানি সংকট, বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও গবাদি পশুর খাদ্য সংকটে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৮৪ সে.মি., ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৬৪ সে.মি. এবং করতোয়া নদীর পানি ৩৬ সে.মি.উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও এখনও বিপদসীমার নিচে রয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ১৫৬ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার ২৯টি ইউনিয়ন এখন বন্যা কবলিত। ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৭৬ জন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৫৩০ মে. টন চাল, নগদ ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ৫ হাজার ৬৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার খয়রাতি সাহায্য হিসেবে সরবরাহ করা হয়েছে।