ডেক্স রিপোর্টঃ খানজাহান আলী থানার উত্তর শিরোমনির সোহাগ হাওলাদারের স্ত্রী, রেবেকা সুলতানা মিতুর(২৮) মৃতদেহ গত ১৮ আগষ্ট তার বসত বাড়ির ঘরের আড়ার সাথে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন খানজাহান আলী থানা পুলিশ। মিতুর শশুর বাড়ির লোকজন আতœহত্যা বললেও তার স্বজনদের দাবি আত্মহত্যা করেনি মিতু তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত মিতুর মেজোবোন হেলেনা বেগম ও মেজো দুলাভাই খবির হোসেনের দাবি মিতু আত্মহত্যা করেনি যৌতুকের টাকার জন্য বিভিন্ন সময় তাকে নির্যাতন করা হত। গত ফেব্রæযারী মাসে মিতুর স্বামী সোহাগের ইজিবাইক কেনার জন্য মিতুর বাবার বাড়ি থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আসেন। গত ১৭ আগস্ট রাত ৮ টার দিকে মিতু তার মেজো বোন হেলেনার কাছে ফোন করে জরুরী ভাবে ২০ হাজার টাকা চাই। মিতুর স্বামী সোহাগ হাওলাদার কিছুদিন আগে কিসিÍতে একটি মোটর সাইকেল কেনেন, করোনার কারনে কয়েকমাস কিস্তি বন্ধ ছিল। সম্প্রতি দোকানপাট সম্পুর্ণ খোলার পরে মোটর সাইকেল শো-রুমের মালিক টাকার জন্য বার বার চাপ দিতে থাকে সোহাগ হাওলাদারের কাছে। সোহাগের কাছে কিস্তির টাকা না থাকায় বিভিন্ন মানুষের কাছে চেষ্টা করেও টাকার জোগাড় করতে ব্যার্থ হয়ে, মিতুকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা চাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে । মিতুর মেজোবোন তাকে সাতদিন পরে ২০ হজার টাকা দেওয়ার কথা জানান। কিন্ত ১৮ আগষ্ট সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সোহাগ মিতুর মেজো বেনের কাছে ফোন করে বলেন মিতু খুবগুরুতর অসুস্থ তাকে লাইফ সার্পোটে রাখা হয়েছে। অসুস্থতার খবর পেয়ে মিতুর মেজোবোন এবং দুলাভাই ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তারা মাঝপথে পৌঁছানের পরে দ্বিতীয় বার ফোন করে সোহাগ হাওলাদার জানান মিতু ঘরের আড়ার সাথে গলায় দড়ি দিয়ে আতœহত্যা করেছে। মিতুর বোন তখনই জানায় আমরা না আসা পর্যন্ত যেনো লাশের ময়নাতদনেÍর জন্য না পাঠানো হয়। আমি আগে দেখতে চাই কেনো এবং কিভাবে আমার বোন মারা গেলো। তার পরে তারা বিকাল ৫ টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌছে জানতে পারে লাশের ময়না তদন্ত শেষ এখন গোসল করানো হচ্ছে কিন্তু তারা মিতুকে শেষ বারের মতো একবার দেখতে চাইলে তাদেরকে মিতুর লাশ দেখতে দেওয়া হয়নি বলে জানান নিহত মিতুর বোন হেলেনা। তারা লাশ পটুয়াখালী তাদের গ্রামের বাড়িতে দাফনের জন্য নিতে চাইলে বাধাদেন সোহাগ ও তার পরিবারের সদস্যরা। এবং হত্যার কারন জানতে চাইলে তাদেরকে নানা ভাবে হুমকি ধামকি ও ভয় ভীতি প্রদর্শন করা হয় এমন পরি¯িথতি সৃষ্টি হয়েছে কথা বললেই মার খাওয়া লাগবে, অবশেষে লাশ না নিয়ে দাফন সম্পন্ন না করেই একপ্রকার পালিয়ে চলেযান তারা এসব কথা বলেন নিহত মিতুর মেজো দুলাভাই খবির হোসেন। তিনি আরো বলেন এই নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার চাই যেনো আর কোন মেয়েকে যৌতুকের জন্য এ ভাবে অকালে প্রাণ না দিতে হয়।
মিতুর শ্বাশুড়ি মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন আমরা কখনো কোন টাকা পয়সা জন্য তাকে কিছু বলিনি আর চাপ প্রয়োগ করার প্রশ্নই আসে না। স্বামী অপমান হবে টাকার জন্য এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বৌমা (মিতু) আত্মহত্যা করেছে। মিতুর স্বামী সোহাগ হাওলাদার বলেন কখন সে ফোন করে তার বোনের কাছে টাকা চেয়েছিল সে বিষয় আমি কিছুই জানিনা আমি তাকে টাকার জন্য কিছুই বলিনি টাকা যদি চেয়ে থাকে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খানজাহাআলী থানার নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর বিশ^াস বলেন, মিতু নিহতের ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে । লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব না । রিপোর্ট হাতে পেলেই জানা যাবে এটি আতœহত্যা নাকি হত্যাকান্ড। তার পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।