অভয়নগর (যশোর) : অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের অবহেলায় এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী ঝাড়ু মিছিল করেছে। এছাড়া রাতে উপজেলার ধুলগ্রাম থেকে এক কিশোরীর গলায় ফাঁস দেয়া লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কিশোরের মৃত্যু এবং ধুলগ্রাম থেকে যুবতীর গলায় ফাঁস দেয়া লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, উপজেলার বুইকরা গ্রামের ক্লিনিকপাড়ার প্রবাসী সবুজ মোল্যার বড় ছেলে সাজু মোল্যা (১৫) পারিবারিক কলহের জেরে রোববার বিকালে বাড়িতে থাকা ইদুর মারা ওষুধ খেয়ে নিজ কক্ষে ছটফট করতে থাকে। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের নিয়ে যায়। এসময় হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা ডা: স্বাগত দাস রোগীকে ভর্তি করে নাইটগার্ডকে দেখতে বলে নিজ ক্লিনিক পপুলার ডায়াগনস্টিকে চলে যান। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে কোন চিকিসককে না পেয়ে বাঁচানোর জন্য নাইটগার্ড আব্দুল মান্নান ওয়াশরুমে নিয়ে ওয়াশ করেন। নাইটগার্ড ওয়াশ করলেও সঠিক পন্থায় না হওয়ায় আনুমানিক সন্ধা সাড়ে ৭ টায় রোগীর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকের অবহেলায় সাজুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতাল চত্বরে শত শত মানুষ ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শ্লোগান সহ ঝাড়– মিছিল দিতে থাকে। এ সময় মিছিলকারীরা চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডাঃ স্বাগত দাস বলেন, সাজু নামের কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বিষক্রীয়া জ্বনিত কারনে। জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থেকে তিনি নাইটগার্ডকে দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদানের বিষয়ে বলেন, আমাদের হাসপাতালে প্রতিনিয়ত বিষপানের রুগীদের ওয়াশ করার কাজ নাইটগার্ড আব্দুল মান্নান কে দিয়ে করিয়ে থাকি। তার এ বিষয়ে অনেক অভিজ্ঞতা আছে। নাইটগার্ডকে দিয়ে ওয়াশ করানোটা আইনসম্মত নয় বলে তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মনজুরুল মুরশিদ বলেন, ওই সময় জরুরী বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ডাঃ স্বাগত দাস। তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অপরদিকে রোববার রাতে উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের ধুলগ্রামের ইদ্রিসের মেয়ে শান্ত (১৬) গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় লাশ উদ্ধার করেছে ক্যাম্প পুলিশ। জানা গেছে, শান্তা সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের সাথে রাগারাগি করে নিজ কক্ষে চলে যায়। রাতের খাবারের জন্য তাকে ডাকাডাকি করা হলে কোন সাঁড়াশব্দ না পেলে দরজা ভেঙ্গে দেখেন আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছে। পরে ক্যাম্প পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে অভয়নগর থানায় নিয়ে আসে। পৃথক দু’টি মৃত্যুর ব্যাপারে অভয়নগর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে ওসি শেখ গণি মিয়া নিশ্চিত করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ দু’টি সোমবার সকালে যশোর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।