তালা প্রতিনিধি : সৌদি প্রবাসী স্ত্রীর প্রায় ১১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পরকীয়ার প্রেমিকাকে বিয়ে করার ঘটনা জানাজানি হওয়ায় স্ত্রী হেনা খাতুনকে হত্যার চেষ্টা করেছে অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য স্বামী আবু অলীদ। ঘটনায় গুরুতর আহত হেনাকে উদ্ধার করে তালা হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁর বাড়ির লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে তালা সদর ইউনিয়নের মাঝিয়াড়া গ্রামে। হেনা ওই গ্রামের মীর্জা রিয়াজুল হকের মেয়ে। অপরদিকে পাষন্ড স্বামী আবু অলীদ যশোরের কেশবপুর উপজেলার বগা গ্রামের মো. শফি উদ্দীন সরদারের ছেলে।
ভুক্তভোগী হেনা খাতুন জানান, প্রেমজ সম্পর্কের জেরে ২০১৮ সালে সাতক্ষীরায় একজন মাওলানা এবং বিজ্ঞ নোটারী পাবলিক আদালতের মাধ্যমে সাবেক সেনা সদস্য আবু অলীদ তাকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন অযুহাত দিয়ে আবু অলীদ স্ত্রী হেনাকে তার বাড়িতে না নিয়ে তালার মাঝিয়াড়া গ্রামে শশুর বাড়িতে বসবাস করতেন। বিয়ের ২বছর পর সংসারের দারিদ্রতা দুর করতে হেনা সৌদি আরবে যান। সেখানে আড়াই বছর গৃহ কর্মীর চাকরি করে বেতনের সমূদয় টাকা স্বামী অলীদের কাছে পাঠাতেন।
হেনা খাতুন জানান, বেতনের ৯লক্ষ টাকা স্বামীর কাছে পাঠিয়ে আড়াই বছর পরে দেশে ফিরে আসি। পিতার বাড়িতে ফিরে সংসার করাকালে লম্পট স্বামী অলীদ’র ১বছর আগে অন্য মেয়েকে বিয়ে এবং সৌদি থেকে পাঠানো সব টাকা কৌশলে আত্মসাৎ করার বিষয় জানতে পারি। এনিয়ে দ্বন্ধ হলে হেনা খাতুন কেশবপুরের বগা গ্রামে তার শশুর বাড়ি যায়। সেখানে স্বামী অলীদ’র উস্কানিতে তাঁর ভাই মাহফুজ সরদার, তৌহিদ সরদার, মন্টু সরদার ও চাচাতো ভাই রজব আলী সহ বাড়ির মহিলারা হেনা খাতুনকে অকথ্য গালিগালাজ সহ মারপিট করে। এঘটনায় আহত হয়ে হেনা খাতুন তালার মাঝিয়াড়া গ্রামে পিতার বাড়িতে চলে আসে।
হেনা খাতুনের পরিবার জানান, গত ১৬ অক্টোবর পাষন্ড স্বামী আবু অলীদ মাঝিয়াড়া গ্রামে শশুর বাড়িতে আসে এবং একপর্যায়ে বিয়ের ঘটনা জানাজানি করায় ক্ষুব্ধ হয়ে হেনাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা সহ শ^াসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য হেনার মুখের মধ্যে হারপিক ঢেলে দেয়। এসময় অচেতন হওয়া সহ হেনার শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক হয়ে গেলে অলীদ পালিয়ে যায়। পরে বাড়ির লোকজন হেনাকে উদ্ধার করে ওই দিন তালা হাসপাতালে ভর্তি করে।
হেনা খাতুন বলেন, সৌদি থেকে পাঠানো ৯লক্ষ টাকা সহ বাড়িতে ফিরে এসে দেয়া ৬০ হাজার টাকা এবং ১ভরি স্বর্নালংকার হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক স্বামী আবু অলীদ। বর্তমানে স্ত্রীর অধিকার সহ দেয়া প্রায় ১১ লক্ষ টাকা ফেরৎ চাইলে আবু অলীদ নানান হুমকি প্রদান করছে। এ ঘটনার প্রতিকার পেতে ভুক্তভোগী স্ত্রী হেনা খাতুন যশোর ক্যান্টনমেন্ট সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।